

মুহাম্মদ তৈয়্যবুল ইসলাম, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
পবিত্র কুরবানি উপলক্ষে ঘর বসে ২০ দিনে লক্ষাধিক টাকার মসলা বিক্রি করেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার গৃহবধূ ফেরদৌস আকতার। ফেইসবুক গ্রুপের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে ১২৫ জন গ্রাহকের কাছে তিনি কুরিয়ারে এসব মসলা পাঠিয়েছেন। নিয়মিত গ্রাহক ছাড়া শুধুমাত্র কুরবানি ঈদ উপলক্ষে এসব অর্ডার পৌঁছান। প্রতি বছর কুরবানি ঈদ উপলক্ষে ফেরদৌসের মসলার চাহিদা থাকে।
ফেরদৌস আকতার বলেন- ২০২০ সালে করোনা সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় ঘরবন্দী ফেরদৌস আকতারের স্বামীর ব্যবসা অনকটা বন্ধ হয়ে যায়। দুই সন্তান নিয়ে কি করবেন কিছুই বুঝতে পারছিলেন না ফেরদৌস। তখন নিজে কিছু করার ভাবনা এলে- স্বামী লুৎফুল বারী চৌধুরী পারভেজের সঙ্গে আলাপ করলেন। ফেইসবুক গ্রুপ “উই ”(ওম্যান এ্যান্ড ই কমার্স- ফোরাম) এর মাধ্যমে ঘরে বসে দেশীয় মসলার ব্যবসা শুরু করেন ফেরদৌস। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বাজার থেকে মাত্র ১০ কেজি মরিচ, হলুদ, জিরা ও ধনিয়া কিনেন তিনি। পরে মরিচ শুকানো থেকে শুরু করে প্যাকটজাত করা পর্যন্ত সকল প্রক্রিয়ার ভিডিও গ্রুপে আপলোড দেন। দেয়ার পরে ওই দিন ৬ জন মরিচর গুঁড়ার অর্ডার দেন। এরপর থেকে প্রতিদিন মরিচ, হলুদ আর মসলার গুঁড়ার অর্ডার বাড়তে থাকে। ওই মাসে লাখ খানেক টাকার মসলার গুঁড়া বিক্রি হয় তাঁর। পরে তিনি পণ্যের নাম দিলেন “কুক মাসালা”। ২০২০ সালের শেষের দিকে তাঁর পণ্যের অর্ডার বাড়তে থাকে। মরিচ, হলুদ আর মসলার গুঁড়ার অর্ডার ডেলিভারি দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না তিনি। ফেরদৌসের এ কাজ সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেন স্বামী পারভেজ। ঘরে বসেই ভালো মানের মরিচ আর নানা রকমর মসলা পাওয়ায় গ্রাহকও বাড়তে থাকে। একবার যিনি অর্ডার করেছেন পণ্যের মান ভালো দেখে একই ব্যক্তির অর্ডার বাড়তে থাকে। অল্প সময় জমে ওঠে তাঁর অনলাইন ব্যবসা। তারপর ফেরদৌসকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। রাঙ্গুনিয়া উপজলার পোমরা ইউনিয়নর গোচরা গ্রামে পরিবার নিয়ে থাকেন ফেরদৌস।
ফেরদৌস আকতার আরো বলেন, পবিত্র কুরবানি ঈদের আগে মসলার অর্ডার বাড়ে। অর্ডার নেয়ার পর সপ্তাহে তিনদিন তিনি পণ্য ডলিভারি দেন। “কুক মাসালা” নাম এই পণ্যর ব্যবসা ব্যাপক পরিসরে করতে চান তিনি। নিজের ফেইসবুক বন্ধু ও ফেইসবুক গ্রুপের মাধ্যমে সারাদেশে নিয়মিত ক্রেতা ৬০০
জনের ওপর। গত দুই বছর ১ হাজার ৯১২ জনের কাছে ২০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন ফেরদৌস। এখন প্রতিমাসে গড়ে লাখ টাকার ওপর পণ্য বিক্রি হয়। মাসিক আয় ৪০ হাজার টাকা।
ফেরদৌস আকতার বলেন,“ দুই বছর আগেও আমার জীবনটা অন্য রকম ছিল। আমার বদলে যাওয়ার পেছনে “উই” গ্রুপের অবদান বেশি। দেশি পণ্যের প্লাটফর্ম উই এর হাত ধরে হাজারা নারী সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে গ্রাম থেকে কাজ করে সফলতা পেয়েছে, অনেকেই উদ্যাক্তা হতে এখন উৎসাহিত হয় এটা আমার স্বার্থকতা।