
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের নিকলীতে একাধিক অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের জমি জালদলিলের মাধ্যমে জোরপূর্বক আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে এলাকার প্রভাবশালী ও দামপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলী আকবরের বিরুদ্ধে। পূর্ব পুরুষের ওই দখলীয় জমি দলীয় ক্ষমতার দাপটে জবর-দখল করেন এ আওয়ামী লীগ নেতা।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগীরা সামাজিকভাবে কোথাও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। এমনকি এ নেতার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না বলেও জানান তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের দামপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র ও অসহায় রইছ উদ্দিনের ছেলে খায়রুল ইসলামের ৮ শতাংশ, কিতাব আলীর ছেলে হাসান আলীর দুই দাগে ক্রয় করেন সাড়ে ৬ শতাংশ ও একই গ্রামের মাছু শেখের ছেলে মো. সেলিমের ৫ শতাংশ। এর মধ্যে ৮ শতাংশ, ৫ শতাংশ এবং সাড়ে ৬ এ স্থলে সে জালদলিলের মাধ্যমে পুরো ২০ শতাংশ জবর-দখল করে নেয় মো. আলী আকবর। এলাকায় বিচার চাইলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতির ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ সালিশেও বসতে রাজি নন। এখন তাদের জমি উদ্ধারের জন্য তারা ধারে ধারে ঘুরছেন বলে জানা যায়।
ভুুক্তভোগী রইছ উদ্দিনের ছেলে খাইরুল ইসলাম কান্নার সুরে দেশবাংলা প্রতিবেদককে বলেন, দাদার আমল থেকে দামপাড়ার মৌজার ১৪৮৬ দাগের ৮শতাংশ জমি সাফ কাওলা মূলে আমরা ভোগ দখলে আছি। বাবা মারা যাবার পর হঠাৎ মো. আলী আকবর তার দল-বল নিয়ে অবৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে জবর দখল করে নেয়। তার ভায়া দলিল অফিসে তল্লাশী করলে জালিয়াতির প্রমাণ মিলে। পরে বার বার বলা হলেও ক্ষমতার দাপটে জমি দখল এখনো ছাড়েন না ওই আ’লীগ নেতা। অফিস আদালত যেন তার সবেই কেনা। এখন কোথায় এর বিচার পাইবো। একই গ্রামের ভুক্তভোগি কিতাব আলীর ছেলে হাসান আলী বলেন, দামপাড়া মৌজার ১০৭৮ ও ১০৮৫ দাগে আমার কাছ থেকে সাড়ে ৬ ক্রয় করে। কিন্তু আমার অন্যান্য ওয়ারিশানদের না জানিয়ে আরও সাড়ে ১৩ শতাংশ জমি জালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি করে নেয়। পরে তা জোর দখল করে নেয়। এখন আমরা কিভাবে তার কাছ থেকে জমি উদ্ধার করবো বুঝতে পারছিনা।
একই অভিযোগ করেছেন একই গ্রামের মাছু শেখের ছেলে মো. সেলিম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দামপাড়া ইউনিয়নের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, মো. আলী আকবরের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় জাল-জালিয়াতির একটি চক্রের সাথে জড়িত তিনি। তার একদিকে টাকা আর অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দলের ক্ষমতা। গত ১০ বছরে এলাকায় বহু অসহায় মানুষের ফসলি জমি, মানুষের বসবাসের শেষ সম্বল বসতভিটা জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে।
এছাড়াও জানা যায়, আলী আকবর এর ভোটার আইডি অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৩ইং, কিন্তু জমি রেজিট্রিতে দেখা যায় ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৩ ইং। এতেই বুঝা যায় জন্মেরও সাত মাস তিন দিন আগেই তার নামে দলিল রেজিস্ট্রি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. আলী আকবর জানান, কাগজপত্র সঠিক হওয়ায় আমি জমি ক্রয় করেছি, তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা দলিল তৈরি করে আমার মানহানী করছে।