
রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠিঃ
সুজন ঝালকাঠি জেলা কমিটির সভাপতি কলেজ শিক্ষক ইলিয়াস সিকদার ফরহাদকে কমিটির আহবায়ক এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মঈন তালুকদারকে সদস্য সচিব করে ঝালকাঠিতে ধানসিঁড়ি ইকোপার্ক রক্ষা আন্দোলনের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঝালকাঠি ধানসিড়ি ইকোপার্ক রক্ষা এবং মুক্ত করতে ঝালকাঠির বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে চতুর্থ সভায় এ কমিটি ঘোষনা করা হলো। গত শনিবার বিকাল ৫ টায় ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জেলা সুজনের সভাপতি ইলিয়াস সিকদার ফরহাদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটি সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে ঝালকাঠি সুগন্ধ্যা-বিষখালী-গাবখান-বাসন্ডা নদীর মোহনায় জেগে ওঠা ৮৮ একর জমিতে (জেগে উঠা চড়) জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধানসিড়ি ইকোপার্ক নামে একটি মেগা প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ২০০৪ সালে একনেকে এ প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয় । ২০০৭-২০০৮ সালে পার্কের জন্য ৮ কোটি টাকাও বরাদ্দ করা হয় । কিন্তু বনও পরিবেশ মন্ত্রনালয় এবং ভুমি মন্ত্রনালয়ের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। এরপরই শুরু হয় এই জেগে উঠা বিশাল চর নিয়ে মামলা মোকদ্দমা। মামলায় স্থগিতাদেশে বন্ধ হয়ে যায় ইকোপার্কের উন্নয়ন কর্মকান্ড। সর্বশেষ এ বছরের প্রথম দিকে প্রস্তাবিত ইকোপার্কের জমি নিয়ে নতুন আরেকটি মামলা হয়। এ মামলায় সরকার পক্ষ হেরে যায়। তাই আবার ইকোপার্ক ইস্যু আলোচনায় চলে আসে।
আদালতে সরকার পক্ষের শক্ত অবস্থান নেয়ার দাবি উঠে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের। পাশাপাশি বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় ঝালকাঠিবাসির মধ্যে। এরই ধারাবাহিকতায় সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ইকোপার্ক প্রকল্প বাস্তবায়ন, দ্রæত সরকার পক্ষের উচ্চ আদালতে আপীল ও মামলা জটিলতার অবসানে দৃশ্যমান ভূমিকার দাবি উঠেছে। ধানসিড়ি ইকো পার্ক রক্ষা ও নদী বাচাঁও আন্দোলনের আহবায়ক ইলিয়াস সিকদার ফরহাদ বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্যসূত্র খুঁজে পেয়েছে। সরকারের সাথে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি সংস্থা এর সাথে জড়িতদের প্রতিবেদন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠিয়েছে বলে সূত্র জানায়। আগামী ২৫ জুলাই সোমবার সকাল ১১ টায় ঝালকাঠি শহরের বার চালা প্রাঙ্গণে একটি মানববন্ধনের মাধ্যমে আমরা ইকোপার্ক রক্ষায় উচ্চ আদালতে দ্রæত আপীল আবেদন দাখিল ও সরকার পক্ষের দৃশ্যমান শক্ত অবস্থানের দাবি জানাবো। কমিটি সূত্র জানায়, এরপর ইকোপার্ক বাঁচাও দাবিতে বিস্তারিত পরিস্থিতি জানিয়ে ঝালকাঠিবাসির স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রনালয়, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে।
এ কমিটির যুগ্নআহবায়ক হলেন, জাতীয় পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আনু, পৌর কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবিল, বিশিষ্ট কবি কবিতা চক্রের সাধারণ সম্পাদক মুহাঃ আল-আমিন বাকলাই, হোসাইন আকতার, এডভোকেট আককাস সিকদার, কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত দাস হরি, এডভোকেট সাকিনা আলম লিজা, হাসান মাহমুদ ও শাকিল হাওলাদার রনি। সদস্যরা হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, স্বপন কুমার সেন গুপ্ত, মোঃ সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল, এসএম হুমায়ুন কবীর, জাসদ সভাপতি সুকমল ওঝা দোলন, ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান, রবীন্দ্র নাথ মল্লিক, অমল চন্দ্র নট্ট, মোঃ নান্নু মিয়া, এসএ জুয়েল হাওলাদার, দীপু লাল দাস, আবু বকর সিদ্দিক, জয়ন্ত কুমার সাহা, সাব্বির হোসেন রানা, শুভ ব্যাপারী প্রমুখ।