
তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা:
গাইবান্ধার প্রত্যান্ত অঞ্চলে এক সময়ে বাড়ির উঠানে দেখা যেতো ইন্দিরা বা কুয়া। তবে প্রত্যেক বাড়িতে নয়। এক ইন্দিরা থেকে প্রায় ৫০ টি পরিবার পানি সংগ্রহ করতেন। গ্রামীণ বধূরা কলসী কাঁধে দলবেঁছে ছুটে আসতেন ইন্দিরা পাড়ে। তারা বদনার গলায় রশি টেনে পানি তুলে ভরাতেন কলসী। আবার কাঁধে নিয়ে ফিরতে হয় বাড়িতে। কিন্তু কালেরগর্ভে হারিয়ে গেছে সেইসব ইন্দিরা-কুয়া। তাইতো এখন আর গ্রামীণ বধূদের দেখা মেলে না ইন্দিরার পাড়ে।
শনিবার (১৬ জুলাই) গাইবান্ধার কামারপাড়ায় হঠাৎ দেখা দেখা গেছে দুইটি ইন্দিরা। প্রায় আশির দশকে নির্মিত এসব ইন্দিরাগুলোর এখন ব্যবহার না থাকায় অযত্নে-অবহেলা পড়ে রয়েছে। অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে কালের স্বাক্ষী হয়ে।
জানা যায়, তৎকালীন সময়ে গাইবান্ধার প্রত্যান্ত অঞ্চলের মানুষ তৃষ্ণা পূরণে ইন্দিরা বা কুয়া থেকে সংগ্রহ করতো। বধূরা প্রত্যেক দিন কোমর দুলিয়ে এক কলসী পানি সংগ্রহ করে মজুদ রেখে পরিবারের সবাইমিলে পান করতেন। কিন্তু কালের আবর্তনে এখন এ এলাকার সুপেয় পানির একমাত্র উৎস কুয়াগুলো বিলীন হয়েছে। যা এখন শুধুই স্মৃতি। এর স্থানে দখল করেছে টিউবয়েল ও বৈদ্যুতিক চালিত পাম্প। তাই এ প্রজন্মের কাছে কুয়া এখন অজানা।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি ধলিমাই বেওয়া জানান, প্রায় তিন দশক আগে অন্যের বাড়ির কুয়া থেকে খাবার ও ছোয়া-মোছার পানি সংগ্রহ করতেন। এখন বাড়ি টিউবয়েল স্থাপন করায় কুয়ার পানি আর ব্যবহার করেন না।
আকবর আলী নামের আরেক বৃদ্ধ বলেন, ইন্দিরা বা কুয়ার পানি অত্যান্ত সুস্বাদু ছিল। তবে শুকনো মৌসুমে এসব কুয়া পানির সংকটও দেখা দিয়েছিল। এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে কুয়াগুলো।