
আসাম প্রতিনিধি, সুজন চক্রবর্তীঃ
আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার অনেক জায়গায় জল এখনও কমেনি। মানুষ জলের মধ্যেই ঘর বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন। হালি চারা লাগানোর সময় প্রায় অতিক্রান্ত। জেলার কৃষিজমি এখনও জলের তলায়। পুকুর, ফিসারি ডুবে মাছ বেড়িয়ে যাওয়ায় মৎস্য চাষীদের মাথায় হাত। বানের জলে অসংখ্য গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। গ্রামের কৃষক এবং গরীর মানুষ সর্বশান্ত। এমনিতেই আমাদের অঞ্চলের কৃষির অবস্থা শোচনীয়,তার উপর এবারের মে- জুন মাসের পরপর দুইবারের বন্যায় কৃষক পথে বসেছেন। ঘরবাড়ি সংস্কার সহ সারা বছরের খাওয়া পরা সহ সংসার খরচ তারা কিভাবে চালাবেন? এখন বন্যার জল কমার সঙ্গে চারদিকে জলবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। বুধবার করিমগঞ্জে সিপিআইএম বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়ে এই কথাগুলি বলেন দলের আসামরাজ্য সম্পাদক মন্ডলির সদস্য নির্মল দে। তিনি বলেন, মে মাসের প্রাক বর্ষার প্রথম বন্যার সময় সিপিআইএম এর পক্ষ থেকে জেলাশাসককে স্মারকপত্র দিয়ে বন্যারোধে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় কিন্তু রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসন সেই কাজ করেননি। নদী বাঁধ এবং সুইচ গেটগুলোর অবস্থা শোচনীয়। প্রসঙ্গক্রমে শিলচরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিলচরের বন্যায় বেতুকান্দির ঘটনাকে বারবার সামনে আনা হচ্ছে। অথচ একুশটি স্থানে বরাকের বাঁধ ভেঙ্গে জল বেরিয়ে এসেছে। এই কথা চেপে যাওয়া হচ্ছে। এদিন আটদফা দাবি সম্বলিত স্মারকপত্র চক্র আধিকারিকের মাধ্যমে জেলা উপায়ুক্তের কাছে প্রেরণ করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে বন্যায় সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ঘরগুলির জন্য ৩ লক্ষ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ঘরগুলির জন্য ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরন, বন্যায় ক্ষতি হওয়া ফিশারির জন্য বিঘাপ্রতি ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরন, বানভাসি মানুষের জন্য পরিবার প্রতি মাসিক ৭৫০০ টাকা অনুদান দেওয়া, বাঁধ, সুইচ গেট, রাস্তা, সেতুগুলির সংস্কার, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাধ্যতামূলক এমএনরেগার কাজ দেওয়া, আসামের বন্যাকে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ইত্যাদি। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানুষের নিকট থেকে সংগৃহিত বেশ কিছু ক্ষতিপূরণের আবেদন চক্র আধিকারিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। করিমগঞ্জ ছাড়া বদরপুর, রামকৃষ্ণনগর, পাথারকান্দি সার্কল অফিসেও একই দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সিপিআইএম কর্মীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক পরিতোষ দাশগুপ্ত, লোকাল কমিটির সম্পাদক অরুন দত্ত, জেলা সম্পাদক মন্ডলির সদস্য কালিপদ নাথ প্রমূখ।