
প্রতিনিধি কুষ্টিয়া:
কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব- ১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল।
শনিবার (১৬ জুলাই) বিকালে র্যাব -১২ সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইলিয়াস খানের সাক্ষরিত র্যাবের পাঠানো লিখিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল নিহতের ঘটনায় তার চাচা মো. মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৮ জুলাই কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে র্যাব উদ্যোগী হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১২, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খানের নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল ১৬ জুলাই রাত ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলা এলাকায়’ একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যা মামলার সন্দেহভাজন ২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেন।
র্যাবের এ বিজ্ঞপ্তিতে আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের এ মামলার তদন্তকারী বিভাগ নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত দুজন হলেন- কুষ্টিয়া পৌর এলাকার থানাপাড়ার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মো. কাজী সোহান শরিফ (৪৪) ও কুষ্টিয়া পৌর এলাকার চর কুঠিপাড়ার মৃত খন্দকার হারুন অর রশিদের ছেলে খন্দকার আশিকুর রহমান জুয়েল (৪০)। গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন র্যাব -১২ সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইলিয়াস খান।
সাংবাদিক রুবেল হত্যা সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে আন্দোলন করে আসছিলেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত সর্বস্তরের সাংবাদিকরা। শেষ দিনের গত ১৪ জুলাই আন্দোলন কর্মসুচীতে সাংবাদিক নেতারা রুবেল হত্যায় জড়িত আসামিদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন। ৭ দিনের মধ্যে জড়িত আসামিদের ধরতে ব্যর্থ হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন তারা। সেই হুশিয়ারি দেওয়ার দুই দিনের মাথায় সন্দেহভাজন দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলো র্যাব।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই রবিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিক রুবেল কুষ্টিয়া শহরের বাবর আলী গেট সংলগ্ন নিজ পত্রিকা অফিসে অবস্থানকালে মোবাইলে একটি কল পেয়ে তার অফিস থেকে বের হয়ে এন এস রোডের সিঙ্গার মোড়ের দিকে যান। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিলো। এ ব্যাপারে সাংবাদিক রুবেলের ছোট ভাই মাহাবুব রহমান সোমবার (৩ জুলাই) রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার জিডি নম্বর- ২০৩। এর পর গত বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী নির্মাণাধীন কুমারখালী যদুবয়রা সংযোগ সেতুর শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচ থেকে কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টাস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়ার স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক কুষ্টিয়ার খবরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং জাতীয় দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান রুবেলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা নৌ-পুলিশ।
এ ঘটনায় শুক্রবার (৮ জুলাই) নিহত হাসিবুর রহমান রুবেলের চাচা মিজানুর রহমান বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর-১২। কিন্তু অদ্যবধি রুবেল হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার বিষয়ে পুলিশে নির্লিপ্ত ভুমিকার অভিযোগ তুলেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লকের হাবিবুর রহমানে ছেলে। রুবেল সাংবাদিকতার পাশাপাশি কুষ্টিয়া মিউনিসিপ্যালিটি মার্কেটে আল মদিনা ভান্ডার নামে ছোট ভাইয়ের সাথে কাঁচামালের আড়ত (পাইকারি) ব্যবসা করতেন। এছাড়াও তিনি অপর এক পাটনারের সাথে বিএডিসিতে ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন।