

এম আর আমিনঃ
চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। চলতি বছরের শেষনাগাদ খুলতে পারে টানেলের দুয়ার।স্বপ্নের এ টানেল নির্মাণ কাজের আর মাত্র অবশিষ্ট রয়েছে ১৪ শতাংশ। ৮৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি টানেলের উভয়প্রান্তে এ্যাপ্রোচ রোডের কাজও ৮৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতুর পর কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিতব্য টানেলই হবে আরেক চমক।ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। কিন্তু চালুর পর টানেলকে কেন্দ্র করে যে বিশাল আকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরুর আশা করা হচ্ছে, সেটি সামলানোর জন্য নিরাপত্তা দেওয়ার পরিকল্পনা ও উদ্যোগ কতটুকু এগিয়েছে?
কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তুলতে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন টানেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। নির্মাণ কাজ করছে চীনা কোম্পানি ‘চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন,নদীর তলদেশের টানেলের দুটি টিউব নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। টানেলের ভেতরে অবকাঠামোগত কাজ চলছে। টানেল সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। ডিসেম্বরের মধ্যে টানেলের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী— ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলে প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। একটির সঙ্গে অপর টিউবের দূরত্ব ১২ মিটারের মতো। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেন তৈরি করা হয়েছে। টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম ও প্রান্তে থাকছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এ ছাড়া ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজ রয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে। ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার টানেলে দুটি টিউব দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে।সিএমপির কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, কর্নফুলী টানেলকে কেন্দ্র করে টানেলের আশপাশের এলাকাতেই এই পুলিশ লাইন্স করার কথা বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে কিন্তু সারা দেশে এই রেশিও যদি দেখি তাহলে ৮৫০ জনের জন্য ১ জন পুলিশ আছে। অথচ চট্টগ্রাম একটা গুরুত্বপূর্ণ শহর। একটা বড় শহরে যা যা থাকে সবই আছে এখানে। কর্নফুলী টানেলকে ঘিরে দ্বিতীয় পুলিশ লাইন্সের বিষয়ে তিনি বলেন, সদর দপ্তরে লোকবল চেয়েছি এবং দ্বিতীয় আরেকটা পুলিশ লাইন্স করার বিষয়ে প্রস্তাবও দিয়েছি। কর্ণফুলীর দিকে এই লাইন্স করার প্রস্তাব পাঠিয়েছি আমরা। কারণ টানেল করার পর ওই এলাকায় শিল্পায়ন বাড়বে। এছাড়াও আমরা থানার সংখ্যা বাড়িয়ে ২০ টা করার প্রস্তাব দিয়েছি।
সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানিয়েছেন, পুলিশ লাইন স্থাপনের প্রস্তাবটি বর্তমানে পুলিশ সদর দফতরে আছে। সেখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদনের পর সেটা ভূমি মন্ত্রণালয়ে যাবে। ভূমি বরাদ্দ পাবার পর আরও দাফতরিক প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।টানেল উদ্বোধনের আগেই নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু যে গতিতে সিএমপির প্রস্তাবনাগুলো আগাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে আরও সময় লাগবে। এর মধ্যে টানেলের কাজ শেষ হয়ে যাবে। অথচ টানেল এলাকায় থানা ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত স্থানটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে।কর্ণফুলী নদীর পূর্ব প্রান্তের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে পূর্ব প্রান্তে পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন টানেলটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা।