
মো: নিয়ামুল হাসান নিয়াজ:
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এখন চলছে শেষ দিনের বয়ান। এরপর আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বও। বেলা ১১ থেকে ১২টার মধ্যে মোনাজাত হওয়ার কথা। যদিও প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত সকাল ১০টায় শুরু হয়।
এরই মধ্যে মোনাজাতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন মুসল্লিরা।
রোববার (২২ জানুয়ারি) তৃতীয় দিন ফজরের পরই গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয়েছে বয়ান। ভারতের দিল্লির মোরসালিন নিজামুদ্দিন বয়ান করছেন। এবার ইজতেমার মাঠে আসেননি বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ আহমদ কান্ধলভী। ফলে হেদায়েতি বয়ান ও আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী।
দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির আগমনে মুখর ইজতেমার মাঠ প্রাঙ্গণ। আল্লাহর জিকির আর আখেরাতের চিন্তায় সময় পার করছেন টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে জড়ো হওয়া মুসল্লিরা। তবে, শীতের কারণে কিছুটা সমস্যায় ভুগছেন তারা।
শনিবার রাত থেকেই আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানের দিকে আসা শুরু করেছেন। ঢাকা ও আশপাশের এলাকার মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন ফজরের পর থেকে। তাদের একটাই লক্ষ্য আখেরি মোনাজাতে শরিক হওয়া।
তবে বরাবরের মতো এবারও যানবাহন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সবাইকে। বিমানবন্দর এলাকা ও আশুলিয়া থেকে সব যানবাহনকে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ওদিকে বন্ধ আছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কও। এতে যারা ভোরে রওনা দিয়েছেন তাদের দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে আসতে হচ্ছে। কেউ কেউ নদী পথে, কেউবা ট্রেনে বা ছোট ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে আসছেন ময়দানের দিকে।
এদিকে দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ৫টি ‘মোনাজাত স্পেশাল’ ট্রেন পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এরই মধ্যে ট্রেনগুলো সব কমলাপুর থেকে টঙ্গী স্টেশনে পৌঁছে গেছে।
অন্যদিকে ইজতেমা ময়দান এলাকায় যানজট এড়াতে রোববার ভোর ৪টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সে অনুযায়ী প্রগতি সরণি ক্রসিং-আব্দুল্লাহপুর-ধউর ব্রিজ-আশুলিয়া ক্রসিং-মিরপুর মাজার রোড থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক, চিড়িয়াখানা থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক এবং পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।
সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে মুসল্লিদের তেমন অভিযোগ না থাকলেও, ময়দানের প্রবেশমুখগুলোতে সড়কের দুপাশের দখল নিয়েছে ভাসমান হকাররা। এতে পথ চলতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে অনেকের। ইজতেমার নিরাপত্তায় মোতায়েন আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজারের বেশি সদস্য।
এর আগে গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) শুরু হয়ে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ১৫ জানুয়ারি শেষ হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। রোববার (২২ জানুয়ারি) ফের আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে গত দুবছর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি।