
এভাবে জামালপুর রেল স্টেশনে প্রকাশ্যে টিকিট ব্লাকে চড়া দামে বিক্রি করছে কুখ্যাত টিকিট ব্লাকার লিটন।

মো: আল আমিন, জামালপুর:
পরিবার পরিজনদের সাথে ঈদ উদযাপন শেষে জামালপুরের আন্ত:নগর ট্রেনগুলোতে ঢাকামূখী যাত্রীর উপচে পড়া ভীর দেখা গেছে। এছাড়াও কাউন্টারে ট্রেনের টিকেট না থাকায় কালোবাজারির কাছ থেকেদ্বিগুন মূল্যে টিকেট ক্রয় করতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে এই অঞ্চলের ট্রেনের যাত্রীরা। তবে এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি কর্তৃপক্ষ। নিরাপদ ও আরামদায়ক হওয়ায় জামালপুর জেলাবাসী অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে ট্রেন যাত্রার উপর সবসময় অধিক নির্ভরশীল। আর ঈদের ছুটি বা কোনো উৎসবে এই নির্ভরশীলতা বেড়ে যায় কয়েকগুন। আর এই সুযোগে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারির দৌরাত্ম বেড়ে যায় চরম মাত্রায়। এতে এই অঞ্চলের ট্রেনের যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে জামালপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- সেখানে ট্রেনের যাত্রীদের স্বাগত জানাচ্ছে টিকেট কালোবাজারিরা। আর যাত্রীরা কাউন্টারে গিয়ে টিকেট না পেয়ে এক প্রকার বাধ্য হয়ে কালোবাজারির কাছ থেকে কয়েক গুন বাড়তি টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে ট্রেনের টিকেট। তাদেরই একজন তানভীর হাবিব মীম। তানভীর হাবিব মীমের সাথে কথা হয় দেশবাংলা প্রতিবেদকের। দেশবাংলাকে তিনি জানান-“ঈদের ছুটি শেষ করে আমাকে ঢাকা যেতে হচ্ছে। কয়েকদিন আগে স্টেশনে এসেছিলাম টিকেট কাটার জন্য। কিন্তু কাউন্টারে টিকেট ছিলো না। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে ব্ল্যকারের কাছ থেকে টিকেট কাটলাম। কাউন্টারে তিস্তার চেয়ার কোচ টিকেটের মূল্য ১৯০ টাকার মতো। কিন্তু ব্ল্যাকারদের কাছ থেকে আমি এক হাজার টাকা দিয়ে নিলাম। ” তিস্তা ট্রেনের আরেক যাত্রী নূরে রাব্বি প্রীথু দেশবাংলাকে বলেন-“ জামালপুর স্টেশনে ব্ল্যকাররা যেভাবে প্রকাশ্যে টিকেট বিক্রি করে। এমন পরিস্থিতি আমি বাংলাদেশের আর কোনো জায়গায় দেখি নাই। আমার মনে হয় এখানে সবাই জড়িত। সবাই জড়ি না হলে কিভাবে ব্ল্যাকাররা প্রকাশ্যে টিকেট বিক্রি করে।” এরপর মঙ্গলবার বেলা ৪টার দিকে জামালপুর স্টেশনের ২য় প্লাটফর্মে আসে আন্ত:নগর তিস্তা ট্রেন। সেখানে দেখা যায় ঢাকামূখী যাত্রীর প্রচন্ড ভীর।পরিবার পরিজনদের সাথে ঈদ উদযাপন শেষে কেউবাজীবিকার তাগিদে কর্মস্থল আবার কেউ বা প্রয়োজনের তাগিদে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাচ্ছে হাজারো যাত্রী। তাদেরই একজন সিফাত আহমেদ আনন্দ। সিফাত আহমেদ আনন্দ দেশবাংলাকে বলেন-“ পরিবারের সাথে ঈদ শেষ করলাম। এখন আবার প্রয়োজনের তাগিদে আগের ঠিকানা ঢাকায় যেতে হচ্ছে। ভীর বা জ্যাম ঠেলে এসেছি। আবারো ভীর বা জ্যাম ঠেলে যাবো। এটাই এখন নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে।” তিস্তা ট্রেনের আরেক যাত্রী রজত ভট্টাচার্য বলেন-“জামালপুর স্টেশনে এতো ভীর। যাত্রীরা ঠিকমতো ট্রেনে উঠতে পারছে না। কিন্তু এখনো আমরা এমন ভীর নিয়ন্ত্রনে স্টেশন কর্তৃপক্ষকে দেখতে পেলাম না। এটা আসলে দুঃখজনক।” তবে এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে জামালপুর জংশন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আসাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে বার বার কল দিয়েও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।