
আব্দুল আজিজ, খুলনা থেকেঃ
অর্থ সংকটের কারণে এবার কোরবানীর চামড়া কিনতে পারেনি প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। যে কারনে এবার কোরবানি ঈদে খুলনায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের হাতে চামড়ার বাজার দখলে ছিলো । সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী দরে ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনার কারনে হতাশ এই শিল্পের প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে খুলনার ব্যবসায়ীদের প্রায় ৩ কোটি টাকা পওনা রয়েছে।
জানা যায়, নগরীর শেখপাড়া এলাকায় খুবই পরিচিত নাম একসময়ে চামড়া পট্রি। অর্থ সংকটে আর ট্যানারি মালিকদের কারনে অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে খুলনার ব্যবসায়ীদের পাওনা রয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা । চামড়া ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ তাদের প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখলেও ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় কোরবানীর ঈদের চামড়া এবার কিনতে পারেনি। এই সুযোগে সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী দর দিয়ে ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনে ঘরে তুলেছে।
চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অব্দুস সালাম ঢালী জানান, সরকারীভাবে চামড়ার প্রতি বর্গফুট ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দরেই চামড়া ক্রয় করতে শুরু করেন। রোববার দুপুর থেকে বেশ কয়েকটি গাড়ি এসে সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী দরে চামড়া কিনেতে শুরু করে। যে কারনে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে পারেনি । তিনি আরো জানান, ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া ব্যবসায়ীদের অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই বকেয়া টাকা না পাওয়ায় চামড়া কিনতে পারেনি তারা। আর এ সুযোগ গ্রহণ করেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
চমড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘোষ বলেন, চামড়া ব্যবসা এখন আর প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে নেই। এটা মৌসুমী ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে । তিনি বলেন, আগে ট্যানারি মালিকরা সরাসরি তাদের কাছ থেকে চামড়া কিনতো। এখন পুঁজি সংকটের কারণে তারা বিক্রেতাদের নগদ টাকা দিতে পারেননা। তিনি আরো জানান , কোরবানির মৌসুম আসলেই ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানী মাদ্রাসার সাথে সরাসারি যোগাযোগ করে। ওই কোম্পানীর লোক গাড়ীতে যেয়ে সেখান থেকে চামড়া কিনে। সেখান থেকে তারা চমড়া ৮০০ টাকা দরে কিনে নিচ্ছেন। যে কারনে বিক্রেতারা প্রকৃত ব্যবসায়ীর কাছে আসছেন না ।
চামড়া ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার জন্য কয়েকটি দাবিও করেছেন চমড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘোষ। এ দাবি গুলো হচ্ছে, চামড়া ব্যবসার জন্য ব্যবসায়ীদের একটি নির্ধারিত স্থান দেওয়া। ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে খুলনার ব্যবসায়ীদের পাওনা বকেয়া টাকা আদায়ে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা। সরকারের নির্ধারিত দরে চামড়া ক্রয় করা । ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ বাবর আলী বলেন, অস্থায়ীভাবে আমরা কয়েকজন ব্যবসায়ী এ ব্যবসা করছি। ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে ব্যবসায়ীদের অনেক টাকা আটকে আছে। ঈদের দিন খুলনার ৭ জন ব্যবসায়ী রাস্তায় দাঁড়িয়ে চামড়া ক্রয়ের জন্য অস্থায়ীভাবে দোকান করে সেখানে ব্যবসা করছিল। হঠাৎ কয়েকটি নামী দামি কোম্পানীর প্রতিনিধিরা এসে বেশী দামে চামড়া কিনে নিয়ে যান। এ ভাবে কখনোই এই শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভ্যব না বলেও জানান এই চামড়া ব্যবসায়ী।