
মোসলা’র নেতৃত্বে মেলার নামে চলছে মদ, জুয়া, নগ্নতা *ওয়ারি’র উপ পুলিশ কমিশনারের অনুমোদন দেয়ার দাবি *ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী থানার নামে দৈনিক ১০ হাজার টাকা বখড়াবাজি *মেলা ঘিরে নানা উৎপাতে জনজীবন অতিষ্ঠ
মেহেদী হাসান রিয়াদ:
রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমিন মোহাম্মদ সিটির বালুর মাঠ যেন সাংবাৎসরিক মেলা নৈরাজ্যের আখড়ায় পরিনত হয়েছে। সেখানে মেলার নামে মদ, জুয়া, নানা নগ্নতার সীমাহীন ছড়াছড়ি চললেও তা দেখার যেন কেউ নেই।
এলাকাবাসী জানান, কোনরকম অনুমোদন ছাড়াই গত এক বছর ধরে শতাধিক দোকানপাট আর বিভিন্ন রাইড বসিয়ে জমজমাট মেলা চলছে সেখানে। প্রায় প্রকাশ্যেই চলছে নানারকম জুয়া, মাদক কেনাবেচা। এসব নিয়ে প্রায়ই সেখানে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেই চলছে।
মেলায় আগত দর্শনার্থীরাও মাঝমেধ্যইে অসৌজন্যমূলক আচরণরে শকিার হচ্ছনে। বিশেষ করে নারীদের উত্যক্ত করার ঘটনা ঘটছে হরহামেসাই। মেলাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। চলছে অসামাজিক কার্যকলাপের ছড়াছড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত কোনাপাড়া-নন্দীপাড়া সংযোগ সড়কের পাশে জনৈক মোসলেহ উদ্দিন মোসলা এ মেলার আয়োজন করেছে। জায়গাটি ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী থানার সীমান্তবর্তী হওয়ায় কোনো থানা পুলিশই সেখানবার অপরাধ অপকর্মের দায়দায়িত্ব নিচ্ছে না। অথচ মেলা থেকে উভয় থানার নামে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে বখড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
মেলায় বসানো সারি সারি দোকান ঘিরে প্রতিদিন বিকেল থেকেই মানুষজনের ভিড় জমে উঠে, চলতে থাকে তা গভীর রাত পর্যন্ত। নানা আয়োজনের নামে মাইকে চলে উচ্চ শব্দের চিল্লাপাল্লা। পুলিশি ঝামেলাসহ সবকিছু দেখভালের নামে একেকটি দোকান থেকে তিনশ’ থেকে পাঁচশ’ করে চাঁদা হাতিয়ে নেন মোসলেহ উদ্দিন মোসলা।
মেলা ঘিরে মাদকের অবাধ বেচাকেনা ও সেবনের আখড়া চলার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজ সন্তানদের নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। এসব নিয়ে বাদ প্রতিবাদ পাত্তাও দিচ্ছে না মেলার আয়োজকরা। প্রকাশ্যে দিনের পর দিন অবৈধ মেলা কিভাবে চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে আয়োজক মোসলেহ উদ্দিন মোসলা জানান, ডিএমপি’র ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের মৌখিক অনুমতি নিয়েই মেলা পরিচালনা করছি। তিনি নিজেই যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানাকে মেলার স্বপক্ষে থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন।
তবে ডিএসসিসি’র সংশ্লিষ্ট ৬৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মাসুদুর রহমান মোল্লা বাবুল জানান, মেলার বিষয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যাত্রাবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মুফিদুল ইসলাম জানান, মেলার জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।