
এম এ মামুন, স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী :
রাজশাহীর বাগমারায় নিজেই ১৮ কিলোমিটার ভ্যানগাড়ি চালিয়ে মেয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় পৌঁছে দিয়েছেন এক বাবা। নিহতর বাবার অভিযোগ, চাহিদামত যৌতুক ও জামাইকে মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় তাঁর মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে তাঁর মেয়ে।
সোমবার (১৮ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের নির্দেশে লাশ থানায় পৌঁছে দেন ওই গৃহবধূর বাবা। আজ মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে জামাতা, মেয়ের শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন গৃহবধূর বাবা।
নিহত ওই গৃহবধূর নাম হোসনেয়ারা খাতুন (১৭)। সে উপজেলার যোগিপাড়া ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের ভ্যানচালক আবদুল মালেকের মেয়ে। সাত মাস আগে পাশের বীরকুৎসা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে রানা ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিয়ের পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গতকাল সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন পারিবারিক অশান্তির কারণে হোসনেয়ারা গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে রানা ইসলামের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। অন্যদিকে গৃহবধূর বাবা অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার পর এলাকায় আত্মহত্যার খবর প্রচার করা হয়েছে। এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করতে সময় লেগে যায় পুলিশের।
পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে লাশ থানায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তখন নিজে ভ্যান চালিয়ে মেয়ের লাশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় পৌঁছে দেন বাবা আবদুল মালেক। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশের লাশবহনকারী গাড়িতে লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। দুপুরে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
বাগমারা থানার তদন্ত (ওসি) তৌহিদুর রহমান বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলায় ওই গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়। তিনি আরও বলেন, ওই গৃহবধূর বাবার ভ্যানে রাতে থানায় লাশ আনা হয়েছে। বাহন না পাওয়ায় তাঁর (গৃহবধূর বাবার) ভ্যানেই থানায় নেওয়া হয়।