
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় চায়না খাতুন (১১) নামে এক প্রতিবন্ধী শিশুকে হত্যার দায়ে তার আপন চাচাসহ দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় ঘোষনা দেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মোঃ রাশেদুল ইসলাম এ বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
দ-প্রাপ্তরা আসামাীরা হলেন- বেলকুচি উপজেলার ছোট বেড়া খারুয়া গ্রামের নিহত শিশুর চাচা সাদ্দাম হোসেন (৩১) ও একই গ্রামের আমজাদ আলীর পুত্র সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস মোঃ আকবর আলী (৪৫)।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাদ্দাম হোসেনের সাথে তার চাচাতো ভাইদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। চাচাতো ভাইদের ফাঁসাতে সাদ্দাম হোসেন আপন বড় ভাই জহুরুল প্রামাণিকের বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে চায়নাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তার এ কাজে সহযোগিতা করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আকবর আলী। গত ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে যায় চায়না। রাতের খাবার শেষে চায়না ঘুমিয়ে পড়লে সাদ্দাম তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ির বাইরে নিয়ে গলা টিপে হত্যা করে। পরে মরদেহ বেড়া খারুয়া চরে নিয়ে চাকু দিয়ে চায়নার গলা কেটে ফেলে রাখে। এরপর মরদেহ সেখানেই রেখে চলে যান তিনি।
পরেরদিন ২৬ ডিসেম্বর সকালে বেড়া খারুয়া চরে চায়নার মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা প্রতিপক্ষের চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যার প্রকৃত কারন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই সাদ্দাম ইউপি সদস্য আকবর আলীর প্ররোচনায় ভাতিজি চায়নাকে হত্যা করে। পরে পুলিশ সাদ্দাম হোসেন ও আকবর আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালতে তারা দু’জন হত্যার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক মঙ্গলবার এ রায় দেন।