

ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :
ক্ষুদ্র লৌহজাত শিল্পের উপর নির্ভরশীল ফুলছড়ি উপজেলার পেশাদার কামাররা। বছর ঘুরে পবিত্র ঈদুল আযহা এলেই লোহার নানা জিনিস তৈরির টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে ওঠে ব্যস্ত কামারপাড়া। ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে কোরবানির পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরিতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন ফুলছড়ি উপজেলার কামাররা।
সরেজমিন দেখা যায়, কামারের দোকানগুলোতে কেউ আসছেন পুরোনো ছুরি, কাঁচিতে শান দিতে। কেউ আসছেন নতুন কাজের অর্ডার দিতে। ঈদ সামনে রেখে পশু কোরবানির বড় ছুরি, ছোট ছুরি, চাপাতি, বটির চাহিদা বাড়ছে।
ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কোরবানির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। তাদের দোকানে টুং টাং শব্দ করে তৈরি হচ্ছে একেকটি ধারালো উপকরণ। ছুরিতে ধার দিচ্ছিলেন শাজাহান মিয়া। এই দোকানি কাজের ফাঁকেই বলেন, ২৫ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে রয়েছেন তিনি। সারা বছর তেমন কাজের চাপ না থাকলেও বছরে কোরবানি ঈদে কাজের ব্যস্ততা দি’গুণ বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি হওয়ায় লাভ খুব কম হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ঈদ উপলক্ষে চাপাতি, ছুরি ও বটির চাহিদা কিছুটা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে শাজাহান মিয়া কামারের পাশের দোকানের কামার রহিম উদ্দিন বলেন, কেজি হিসেবে এখানে এসব জিনিস বিক্রি হয়। বটি কেজি হিসেবে মানভেদে ৫০০-২২০০ টাকা, দা ৪০০-১৫০০ টাকায়, ছোট ছুরি ২০০-৬০০ টাকায়, বড় ছুরি ১০০০-২০০০ টাকায় এবং চাপাতি ৪৫০-১৫০০ টাকায় বিক্রি করছি।
এই কামারি আরও বলেন, আজ থেকে কাস্টমারের চাপ বাড়েছে। তবে আগামী এই চাপ আরো বাড়বে। কারণ কোরবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে আসবে, হাট জমজমাট হবে, পশুর বেচাকেনা বাড়বে।
সারা বছর তেমন এসব লোহার সরঞ্জাম তৈরীর কাজ থাকে না। বছরে কোরবানির ঈদ আসলে একটু চাপ বাড়ে। আগের মতো এ কাজে তেমন আয় হয় না। বাবা, দাদারা এ কাজ শিখিয়ে গেছেন। তাদের পেশা ধরে রেখেছি। এখন অন্য কোনো পেশায় যেতে পারছি না ।
আব্দুল কাদের নামে এক ক্রেতা বলেন, কোরবানির গরুর মাংস কাটার জন্য নতুন চাপাতি কিনতে এসেছি। তৈরি করা তেমন ভালো চাপাতি পাচ্ছি না। তাই এক কেজি ওজনের ইস্পাত কিনে নতুন চাপাতি বানাতে দিলাম। এবছর চাপাতির দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে।