
গাজীপুর থেকে সংবাদদাতাঃ
গাজীপুরের শ্রীপুরের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে বরমী নৌঘাটে তৈরী হয়েছে বর্জ্যের স্তুপ, দুর্গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে ।উৎকট দুর্গন্ধে যেমন নদীর পাড়ের মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে তেমনি শীতলক্ষ্যার পানিও দূষিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই এমন সমস্যা নিয়ে সাধারণ লোকজন ভোগান্তি পোহালেও এর সমাধান নেই যেন কারো কাছে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, শ্রীপুরের নদী কেন্দ্রিক ব্যবসা বানিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র বরমী বাজার। প্রাচীনতম এ বাজার ঘিরে যেমন গড়ে উঠেছে দোকানপাট, তেমনি রয়েছে আশপাশের কয়েক হাজার বসতি।দীর্ঘদিন ধরেই বাজারের দোকানপাট ও বাসা বাড়ীর গৃহস্থালী বর্জ্য বিভিন্ন ক্লিনিকের মেডিকেল বর্জ্য সহ নানা ধরনের বর্জ্য শীতলক্ষ্যার তীরে নৌঘাট ঘেঁষে ফেলা হচ্ছে। এতে তৈরী হয়েছে ভাগাড়। বর্জ্যের কারণে সরকারীভাবে নির্মিত নৌঘাটের ব্যবহার দিন দিন সীমিত হয়ে পড়ছে। এই নৌঘাটে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ধশতনৌযান চলাচল করে। এতে পন্য আনা নেয়া সহ কয়েকহাজার যাত্রী এই নৌপথ ব্যবহার করে।
এছাড়াও প্রতি হাটবাী বুধবারে এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় কয়েকগুন।
বরমী নৌঘাটের ইজারাদার তৌফিক মিয়া বলেন, সরকার নৌযাত্রীদের কথা বিবেচনায় সরকার অনেক টাকা খরচ করে তিনটি ঘাট নির্মাণ করেছেন। শৌচাগার, যাত্রী ছাউনিও তৈরী করে দিয়েছেন। তবে মূল সমস্যা হচ্ছে বর্জ্য ঘিরেই। পঁচা, মরা প্রাণী ও নানাপ্রকার প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর বস্তু নৌঘাট ঘিরে ফেলায় এখন তা স্তুপে পরিনত হয়েছে। উৎকট দুর্গন্ধে এই ঘাটে টেকা দায় হয়ে দাঁড়ায়।
বরমী ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাবরিনা আক্তার বলেন, তার বাড়ী কাপাসিয়ার রায়েদ এলাকায়। প্রতিদিন তাকে নদীর ঘাট ব্যবহারকরতে হয়। এখানে যাওয়া আসার সময় বর্জ্যের দুর্গন্ধে নাক চেপে পাড়াপাড় করতে হয়। হারিয়াদী এলাকার ইব্রাহিম খলিল বলেন, বর্জ্যরে কারণে এ নৌ ঘাটটি বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দিন দিন এটি মানুষের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব বর্জ্য নদীর পানির সাথে মিশে পানিরও দূষন হচ্ছে। আগে স্থানীয়রা শীতলক্ষ্যা নদীতে গোসল ও মাছ ধরলেও এখন বাজারের আশ পাশে দূষনের কারণে পানিতে নামাই যায় না।বরমী বাজার বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সরকার বলেন, আশাপাশে কোথাও ময়লা আবর্জনা রাখার স্থান না থাকায় বহুদিনধরেই স্থানীয়দের উদ্যোগে বর্জ্য নদীর পাশেই ফেলা হচ্ছে। আমরা কয়েক বার সতর্ক করলেও কেউ শুনছেন না। রাতের অন্ধকারে লোক চক্ষুর আড়ালে এখন ফেলা হচ্ছে।
তবে এবার আমরা উদ্যোগ নিয়েছি নদীর তীর পরিস্কার করে স্থানটি পরিস্কার করার। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা) গাজীপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক হাসান ইউসুফ খান বলেন, এভাবে নদীর মধ্যে বর্জ্য ফেলার ঘটনা আইন অনুযায়ী ফৌজদারী অপরাধ। জেলা প্রশাসনের মাসিক সভায় এ বিষয়টি তোলা হলেও কেউ নজর দেননি। স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষযে সচেতন হতে হবে। আর নৌঘাট ঘিরে ভোগান্তি তৈরী করা অসভ্য মানুষের কাজ। সবাই মিলে সচেতন হলে দূষন ও ভোগান্তি উভয়ই লাঘব সম্ভব।
বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, স্থানীয়দের নদীর তীরে নৌঘাট ঘিরে বর্জ্য ফেলা বন্ধে অনেক বার সতর্ক করলেও কেউ শুনছেন না। স্থায়ীভাবে বর্জ্য ফেলা বন্ধে বাজারের বণিক সমিতির সাথে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।