

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের পিচিং ভেঙ্গে ২ঘন্টার ব্যবধানে ৩টি ঘর ও ৫টি গাছ নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। শনিবার বেলা ৪টার দিকে উপজেলার পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে হঠাৎ ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে ৩টি ঘর,১টি নলকুপ,১টি খড়ের গাদাসহ টয়লেট ও গাছ-পালা ¯্রােতে ভেসে যায়। হুমকির মুখে রয়েছে শতাধিক বাড়ী-ঘর ও পাত্রখাতা ফেইসকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন অবকাঠামো। পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এমন ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।এরকম চলতে থাকলে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাবে বলে সচেতন মহলের আশঙ্কা।
জানাগেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের কড়াল গ্রাস থেকে চিলমারীকে রক্ষার জন্য নির্মিত ব্রহ্মপুত্রের ডানতীর প্রতিরক্ষা প্রকল্প ও পাউবো বাঁধের কাজ শেষ হতে না হতেই ২০১৭সালের ১৩জুলাই কাঁচকোল উত্তরওয়ারী এলাকায় পাউবো বাঁধে ২৫মিটার জায়গা,১৯ জুলাই কাচকোল দঃওয়ারী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজরুল ইসলামের বাড়ী সংলগ্ন ডানতীর প্রতিরক্ষা প্রকল্পের ২৫মিটার এলাকা, ২৫জুলাই কাঁচকোল ¯øুইচগেটের উত্তরে ১০মিটার,২৮জুলাই ¯øুইচ গেটের ১‘শ গজ উত্তরে প্রায় ৩০মিটার এলাকা নদীতে ধসে যায়।২০১৮সালের ১৭এপ্রিল গভীর রাতে কাচকোল দক্ষিণ খামার এলাকায় ডানতীর প্রতিরক্ষা প্রকল্পের ৫০মিটার এলাকা, ১৬জুন কাঁচকোল দক্ষিণ খামার মাঝিপাড়া এলাকায় ডানতীর প্রতিরক্ষা প্রকল্পের প্রায় ৯০মিটার এলাকা ও ৩জুলাই তারিখে প্রায় ১‘শ ২০মিটার ডানতীর রক্ষা প্রকল্প নদীতে ধসে যায়। সব মিলে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের প্রায় ৬০০মিটার এলাকায় ধসের সৃষ্টি হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকা সমুহে জিও ব্যাগ ফেলে নিয়মিত সংস্কারের মধ্যে রেখেছে। এদিকে গত বছর পুটিমারী কাজলডাঙ্গার বাগানবাড়ী এলাকায় প্রায় ৩০০মিটার পিচিং ধসে যায়। সেখানে নামে মাত্র জিও ব্যাগ ফেলা হলেও বাগানবাড়ীর দক্ষিনে প্রায় ৫০মিটার এলাকায় পিচিং ধসে গিয়ে বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়।
শনিবার বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকায় গিয়ে বাদশা মুন্সি ও শফিকুল ইসলামের ৩টি ঘর নদীতে ভেসে যাওয়ার কথা শুনা যায়। এসময় ওই এলাকায় নদী ভাঙ্গনের দৃশ্য দেখতে হাজারও নারী-পুরুষ ভীড় জমায়। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার নুর বক্ত(৫৫),মহির উদ্দিন(৬০),রবীন্দ্র দাস(৪০),সোহেল রানা(২৫),রাজু মিয়া(২৩),ভোলা চন্দ্র (২১),সন্তোষ কুমার(৪০),সতিষ চন্দ্র(৪০)সহ অনেকে এ প্রতিনিধিকে বলেন, হঠাৎ বেলা ৪টার দিকে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। পরে ২ঘন্টার ব্যবধানে ৩টি ঘর,১টি নলকুপ,১টি খড়ের গাদাসহ টয়লেট ও গাছ-পালা ¯্রােতে ভেসে যায়।ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে শতাধিক বাড়ী-ঘর ও পাত্রখাতা ফেইসকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন অবকাঠামো। রোববার দুপুর পর্যন্ত ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি বলেও তারা জানান।পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে বিভিন্ন জায়গায় এমন ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।এরকম চলতে থাকলে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাবে বলে সচেতন মহলের আশঙ্কা।
রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান,উজানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জিও ব্যাগে বালূ ভর্তি করে ডাম্পিং না করে ফেলে রাখা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ৩টি পরিবারকে গৃহহারা হতে হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন জায়গায় বøক ও পিচিং ধসে যাওয়ার ঘটনায় চরমভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বার বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হওয়া নদীতীরবর্তি মানুষ।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,প্রটেকটিভ ওয়ার্ক হিসাবে ভাঙ্গনের জায়গায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। যেখানে প্রয়োজন সেখানে বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হচ্ছে এবং এটি চলমান থাকবে।