
ইয়ামিন হোসেন:
দেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলা, এই জেলার মানুষ জীবিকার তাগিদে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরর্ত।
ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে ছুটি কাটাতে নাড়ির টানে ছুটে আসেন গ্রামে স্বজনদের সাথে ভাগাভাগি করতে ঈদ আনন্দ।
নারীর টানে ছুটে আসা মানুষরা নানা ভাবে হয়রানি হয় ভোলার লঞ্চঘাটগুলোতে, অন্যজেলা পেরিয়ে এসে নিজের বাড়ীর পাশের লঞ্চঘাটের কর্মচারীদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয় আবার প্রতিবাদ করতে গিয়ে স্ত্রী সন্তানের সামনে লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ও ঘটেছে অনেক।
সরজমিন ভোলার গুরুত্বপূর্ণ লঞ্চঘাট ইলিশাঘাটে গিয়ে দেখা যায় ৫ টাকা টিকেটের গায়ে লেখা থাকলেও আদায় হচ্ছে ১০ টাকা, আবার অনেক যাত্রী থেকে টাকা নিলেও টিকেট দেওয়া হচ্ছে না, প্রতিবাদ করলে লাঞ্চিত হতে হয় যাত্রীদের। যদিও ঘাট ইজারাদারের দাবী অতি উৎসাহী কর্মচারীরা এসব করে থাকে, অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
একই ঘটনা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল লঞ্চঘাটে ও ঘটতে দেখা গেছে।
ভোলা শহরের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে ভেলুমিয়া লঞ্চঘাট, যেই ঘাট দিয়ে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা, সরকারের উন্নয়নের অন্যতম স্থান পায়রা বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের সহজ রাস্তা হওয়ায় এই ভেলুমিয়া লঞ্চঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন আর সেই সুযোগে যাত্রীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করেন ঘাট ইজারাদারের দায়িত্বশীলরা। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই লাঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিবাদী যাত্রীরা।
ভোলার ভেদুরিয়া লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায় লঞ্চে মুর্মূষ রোগী ও বয়স্ক মানুষদের লঞ্চে উঠিয়ে দিতে বা নামিয়ে নিতে পল্টনে উঠলেই টিকেট কাটতে হয়, রোগী বা বৃদ্ধদের রিছিভ করতে এসেছে বললেও হেনস্তা হওয়ার মত ঘটনা ঘটে প্রতিনিয়ত।
এদিকে যাত্রী হয়রানীর বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঝেমধ্যে অভিযান করলেও ঘাটের মুল ইজারাদারের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি শুধু দুই একজন কর্মচারীর কারাদণ্ড ও জরিমানা করতে দেখা গেছে তবে জরিমানার টাকা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর পরই যাত্রীদের থেকেই উসুল করেন বলে জানা গেছে।
ইউসুফ নামের ঢাকাগামী এক যাত্রী বলেন, রক্ষকই এই দেশের ভক্ষক ইলিশার মত গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে সব সময় প্রশাসন ও রাজনীতিক ব্যক্তিদের নজর থাকে আর সেই ঘাটেই অনিয়মের শেষ নাই।
মোস্তাফিজ নামের চট্রগ্রাম গামী এক যাত্রী বলেন ইলিশা ঘাটের পাশেই নৌ পুলিশের একটি থানা রয়েছে আর সেই থানার পাশ থেকেই উত্তাল মেঘনায় স্টিল বডি, ট্রলার, স্পিডবোটসহ ছোট লঞ্চ চলাচল করে আবার যাত্রীরা প্রতিনিয়ত হয়রানী হয় কিন্তু তারা নীরবতা পালন করেন।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোষ্ট দিয়ে এক সাংবাদিক বলেন, যে ইলিশাঘাটে পুলিশ আর বিআইডব্লিউটিএ এর লোকের সামনেই সব ঘটে তারা হাত বদল করে চলে আসে ঘাট স্টাফদের সাথে।
রফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন দলাদলিতে ঘাট ইজারাদাররা অতিরিক্ত মূল্য ঘাট ইজারা এনে এখন প্রকাশ্য চাঁদাবাজি আর যাত্রী হয়রানী করছে, এতে যেমন হচ্ছে মানুষ হয়রানি তেমনি দ্বীপ জেলা ভোলার বদনাম হচ্ছে ও সরকারের দূর্নাম হচ্ছে যেহেতু বেশিসংখ্যক ঘাট ইজারাদার সরকার দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত।
দ্বীপ জেলা ভোলার লঞ্চঘাটগুলোতে যাত্রী হয়রানী বন্ধে প্রশাসনের কঠোর ভুমিকা নেওয়ার দাবী জানিয়েছে জেলার সচেতন মহল।