
মোঃ মাইন উদ্দিন উজ্জ্বল।।
ময়মনসিংহে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতিবাজ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ও দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ময়মনসিংহে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানের পর জাকির হোসেন এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসের সহকারী জাকির হোসেন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে চাকুরী কালীন সম্পদ অর্জন করেন ৪২২.৩৮৭ শতাংশ, তার বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির ২০১৩ সালের মামলা নং ৩০/১২৩৬, মামলা নং ৩১/১২৩৭ ধারা ৪২০/৪৬৭/ ৪৬৮/৪৭১/১০৯ দঃ বিঃ জাকিরের মা কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা নং ৮/২০২২, মামলা নং ৬৩২/২০২১, মামলা নং ১২৫৯/২১ চলমান রয়েছে যাহা সাপ্তাহিক আবির পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এসকল রিপোর্ট প্রকাশে সাপ্তাহিক আবির পত্রিকার সম্পাদক ইউসুফ খান লিটনের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলা করলে বিঞ্জ আদালত খারিজ করে দেয়, পুনরায় হয়রানির উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করছে বলে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ময়মনসিংহের শতাধিক গণমাধ্যম প্রিন্ট, ইলেকট্রনিকস, অনলাইন সাংবাদিকগণ গত (৮ মে) সোমবার সকাল ১১ ঘটিকায় জেলা প্রশাসক এর কার্যালয়ের সম্মুখে ঘন্টা ব্যাপি মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেছেন বিএমইউজে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক আজকের বসুন্ধরা চীপ ক্রাইম রিপোর্টার শিবলী সাদিক খান বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।


স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের সচিত্র প্রতিবেদন ইতিপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। অনেক কর্মকর্তাকে রদবদল করা হয়।
স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক গঠিত “স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম” এর ২৫টি সুপারিশমালা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সভার কার্যবিবরনী-এর আলোকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, দুদকের এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করে, যেকোনো মূল্যে স্বাস্থ্যখাতকে সেবামুখী করা হবে। তদন্তের সূত্র ধরেই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২৩ কর্মকর্তাকে রাজধানীর বাইরে বদলি করেছিল সরকার।তিনি তৎসময়ে বলেছিলেন মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। আমাদের সচিব মহোদয় সেটি নিয়ে কাজ করছে। যার প্রয়োজন আছে সে সেখানে যাবে। কোনো তদবিরে কাজ হবে না। এমন সব জায়গা থেকে তদবির আসে যে সেটা উপেক্ষা করতে আমাদের কষ্ট হয়ে যায়।


জানা যায় ডাঃ এবিএম শামসুজ্জামান (কোড-৪৩৩৯৯), নিয়মিত উপপরিচালক (শৃঙ্খলা) স্বাস্থ্য অধিদফতর, মহাখালী, ঢাকা, গত ইং ২৩/২/২০২৩ স্মারক নং- ৪৫,০০,০০০০,১৪৮, ১৯,০১০,২১,১৫৭ মূলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সহকারী সচিব (পার-২) মোঃ আলমগীর কবির স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় বদলী/ পদায়নকৃত উক্ত কর্মকর্তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে উপ পরিচালক হিসাবে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে যোগদানের জন্য বলা হয়। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে ময়মনসিংহে বসবাস করার পরেও উক্ত বদলীর আদেশ তদবির বানিজ্যের মাধ্যমে ২৯ মার্চ ২০২৩ইং স্মারক নং- ৪৫,০০,০০০০, ১৪৮,১৯,০০১,২২-২২৩ এত মূলে অপর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করিয়ে পূর্বের বদলির আদেশ বাতিল করাতে সক্ষম হন। প্রশ্ন হচ্ছে নিজ স্ত্রী-সন্তান ময়মনসিংহে বসবাস করেন এবং সন্তানদের পড়াশোনা করাচ্ছেন, সেখানে মচিম হাসপাতালে বদলিকৃত স্থানে যোগদান করে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত না করে বদলির আদেশ কোন স্বার্থে কত টাকার বিনিময়ে বাতিল করিয়ে স্বপদে বহাল থাকার সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন! শৃঙ্খলা শাখায় এমন কি মধু অবৈধ অর্থ উপার্জনের খাতগুলো রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে ময়মনসিংহে সচেতন মহলের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার বলেছিলেন, প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্রয়, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, পদায়ন, চিকিৎসা দেওয়া, চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইকুইপমেন্ট ব্যবহার, ওষুধ সরবরাহসহ বিভিন্ন দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০১৯ সালে দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক বলেছিলেন, ১১টি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে আমরা মনে করেছি দুর্নীতির ক্ষেত্র রয়েছে। আর ২৫টি পরামর্শ দিয়েছিলেন ওইসব ক্ষেত্রকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য পরামর্শগুলো যদি মন্ত্রণালয়ে গ্রহণ করা হয় তাহলে দুর্নীতি রোধে আমাদের ভালো ফল দেবে।
ময়মনসিংহে মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা চলমান রয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কমিটি কাজ করছে, কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের মধ্যে ডাঃ এবিএম শামসুজ্জামান, দুর্নীতিগ্রস্থ জাকিরকে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন। সংবাদ প্রকাশের জেরে মিথ্যা মামলা, পেশাগত দায়িত্ব পালনে নির্যাতন হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ গ্রহণকারী দু/চার জন থানা, ভূমি অফিস, হাসপাতালের দালাল নামধারী সাংবাদিক দুর্নীতিবাজের পক্ষাবলম্বনের মাধ্যমে অপসাংবাদিকতা দালালি চামচামী করে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এসকল নামধারী লেবাস সাংবাদিকদের অতি উৎসাহী হয়ে অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারে নির্লজ্জ হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে এসে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশের আহবান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহোদয়ের নিকট স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য ডাঃ এবিএম শামসুজ্জামান (কোড-৪৩৩৯৯), নিয়মিত উপপরিচালক (শৃঙ্খলা) স্বাস্থ্য অধিদফতর, মহাখালী, ঢাকাকে কোন স্বার্থে এক মাসের ব্যাবধানে বদলী/পদায়ন করেও পুনরায় পূর্বের কর্মস্থলেই পুনঃপদায়ন করা হয়েছে এর রহস্য কি? জানতে চায় সচেতন ময়মনসিংহবাসী।