
বিশাল রহমানঃ
“নড়াইল পরিস্থিতি শান্ত, ক্ষতিগ্রস্থ ঘর ও মন্দির মেরামত” শিরোনামের সংবাদটি ঘন্টাদূয়েক আগে প্রথম আলো অনলাইনের। এ শিরোনামটি দেখে আমার মনে পরে গেল আইয়ুব খান ও ইয়াহিয়া খানদের আমলের সরকারি প্রেসনোটের কথা।
সেসময় এরকম প্রেসনোট প্রায়ই পত্রিকায় দেখা যেতো। জনগণ এসব প্রেসনোটের কথায় বিশ্বাস রাখতো না। আধুনিক জমানায় দেশের গণমাধ্যমগুলোতে সরকারি প্রেসনোটের আধুনিকতম রুপান্তর হলো ফরমায়েশি সংবাদ। নড়াইলে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও তান্ডব চলে গেলরাতে।
এঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষসহ দেশের সুশীল সমাজ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বেশ সোরগোল শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে এ ধরনের ফরমায়েশি সংবাদ প্রচারের জন্য চাপ,হুমকি- ধামকি,লোভ, ভয়ভীতির উপকরণ নিয়ে মাঠে নামে সংশ্লিষ্ট মহল। সুশাসন নিশ্চিত হলে এঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাদের কমপক্ষে বদলি অর্ডার হওয়ার কথা।
গণমাধ্যমের এসময়ের সংবাদ শিরোনাম হওয়ার কথা যা তা না হয়ে প্রেসনোটকে সংবাদ বানিয়ে পাঠকদের বাধ্য করে এধরণের ফরমায়েশি শিরোনাম গিলতে বাধ্য করার এক অদ্ভুত কৌশল।
আমার লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়, অবনত মস্তকে নিজেকেই প্রশ্ন করি সত্যিই কি এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।
এদেশে সাংবাদিকগণ মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের জীবন বলিদান দিয়েছেন। নিকট অতীতে সংবাদ প্রকাশজনিত কারণে হুমায়ুন কবির বালু,রানার সম্পাদক মুকুল ভাইসহ অসংখ্য সহকর্মী জীবন দিয়ে গেছেন।প্রতিনিয়ত সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য জেল,জুলুম,হুলিয়া উপেক্ষা করে অধিকাংশ সাংবাদিক কাজ করছেন। আবার বিপরীত দিকে হয়তো নিজের কিংবা অন্য কারো স্বার্থ রক্ষার জন্য আমরা কেউ কেউ এধরণের ফরমায়েশি সংবাদ প্রচার করছি। সবশেষে কবির ভাষায় বলতে ইচ্ছে করছে — কার নিন্দা কর তুমি? মাথা কর নত!
এ আমার,এ তোমার পাপ।