

বিশাল রহমান, ঠাকুরগাঁও থেকেঃ ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আকবর হোসেন ১২ জুলাই ইন্তেকাল করেছেন। বাদ আছর ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদ প্রাংগনে মরহুমের নামাজে জানাযায় শহরের নানা শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত হয়। রাষ্ট্রীয় মর্যাদা তথা গার্ড অফ অনারের ব্যবস্থা না থাকায় জানাযায় উপস্থিত জনতা ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন। ঠাকুরগাঁও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর বলেন, আকবর হোসেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন কিন্তু তার কোন সনদ বা নথি না থাকায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার সুযোগ নেই। জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্মসম্পাদক আসম গোলাম ফারুক রুবেল বলেন, সনদ – নথি এসব ওজুহাতে এরকম বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অবহেলা করা অনুচিত। ঠাকুরগাঁওয়ের মেধাবী ক্রীড়া সংগঠক রাশেদ ইকবাল তার প্রতিক্রিয়ায় দৈনিক দেশবাংলাকে বলেন,পত্রিকার পাতায় খবর দেখি ২ হাজার ৫০ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধার ভূয়া সনদের মাধ্যমে ভাতা গ্রহণ করছে। অথচ সর্বজন স্বীকৃত মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আকবর হোসেনকে তাঁর প্রাপ্য সম্মানটুকুই দিতে ব্যর্থ হলাম আমরা। জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আয়েশা সিদ্দীকা তুলি বলেন, একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে শুধুমাত্র কাগজ পত্রের অজুহাতে সম্মান না দেওয়াটা অযৌক্তিক। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কার জন্য নিজের মূল্যবান সময় রাজনীতির পিছনে ব্যয় করি? জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন, মরহুম আকবর হোসেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন কিন্তু তার দালিলিক কাগজপত্রের অজুহাতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা না দেওয়া দুঃখজনক। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান বাবলু বলেন, মরহুম আকবর হোসেন আমাদের সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর নাম তালিকাভূক্ত না হওয়ায় তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তিনি কিন্তু এ অঞ্চলের হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার নিকট শ্রদ্ধা ও সম্মানের সর্বোচ্চ আসনে রয়েছেন। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসকের ফোনে ফোন করা হলে ফোনটি ব্যস্ত থাকায় তাঁর কোন বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা দৈনিক দেশবাংলাকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার বাহিরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কাউকে দাফন তথা গার্ড অফ অনার প্রদানের কোন সুযোগ নেই। উল্লেখ্য ঠাকুরগাঁও জেলায় বিগত ক’বছরে মুক্তিযোদ্ধার সংশোধিত তালিকায় এমন কিছু নাম মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়েছে যাদের নিয়ে রণাঙ্গনের যোদ্ধাদের তীব্র আপত্তি রয়েছে। কিন্তু এসব বিষয়ে বার বার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করে কোন সুরাহা হয়নি বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আকবর হোসেনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা না দেওয়া এবং মুক্তিযোদ্ধা এবং সংগঠকদের মূল্যায়ন করে ভূয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি স্থানীয় জনসাধারণ ও সুশীল সমাজের।