
আক্তারুজ্জামান, মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
সন্তানের হাত ধরে পিতা, নববধুর হাত ধরে স্বামী, প্রেমিকার হাত ধরে প্রেমিক আবার কেউ বা এসেছেন একা। এভাবেই ঈদের বিকেল থেকে জমে উঠেছে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোরবানীর ব্যবস্ততা শেষে বিভিন্ন বয়সের মানুষ একটু অবসাদ নিতে ঘুরতে এসেছেন। বিনোদন প্রিয় মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে বিভিন্ন পার্ক, পর্যটন এলাকা ও বিনোদন স্থান সমুহ। তবে জেলার বিনোদন ও পর্যটন এলাকাগুলি আধুনিকায়ন করার দাবী ভ্রমণপেমিদের।
কার্পাসডাঙ্গার রুমি মন্ডল। সদ্য বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সাথে এটাই প্রথম ঈদ। ঘুরতে এসেছেন মুজিবনগর তামান্না পার্কে। কথা হয় তাদের সাথে। রুমি মন্ডল দেশবাংলাকে জানান, বিয়ের আগে অনেক বারই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পার্কে ঘুরেছেনে পরিবারের সাথে। এবারই স্বামীর সাথে ঘুরতে আসা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঘুরতে আসাটা একটি ভিন্ন ধরনের তৃপ্তি যৃুক্ত হয়েছে। সাথে পরিবারের সদস্যরাও আছে। সকালে রান্নাান্নার ব্যস্ততা শেষে বিকেলে ঘুরতে এসেছেন তারা।
সহড়া তলার রমজান আলী ঘুরতে এসেছেন মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে। সাথে রয়েছে পরিবারের অনেক সদস্য। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। বছরে দুই ঈদে গ্রামে আসেন। তিনি বলেন, চাকুরির জন্য কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয়না। মেহেরপুরে তিনটি ছোটবড় পর্যটন এলাকা রয়েছে। আমরা তিনটিতেই ঘুরতে যায়। তিনি বলেন, বিনোদন এলাকাগুলিকে আরো আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন।
সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের যুবক সোহেল রানা আমঝুপি নীলকুঠিতে ঘুরতে এসেছেন। দেশবাংলার কথা হয় তার সাথে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। তিনি জানান, আমার প্রেমিকা আমার সাথে দেখা করতে আসার কথা। প্রতিবছর আমাদের দুজনের দেখাদেখি হয়। এবারও কথা দিয়েছে। আমি একটু আগেই চলে এসেছে। মোবাইলে কথা হয়েছে, সেও আমার সাথে দেখা করতে আসছে। সোহেলরানা জানায়, মেহেরপুর জেলায় মাত্র তিনটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। একটি হলো মুজিবনগর অন্য দুটি আমঝুপি নীলকুঠি ও ভাটপাড়া নীল কুঠিবাড়ি। ভাটপাড়া নীলকুঠিবাড়িটি সদ্য বানিজ্যিক কেন্দ্র হওয়ায় সেখানে প্রবেশে টাকা লাগে, তাই এবছর সেখানে যায়নি। ঈদের নামাজ শেষে দুপুরে আমঝুপিতে এসেছি।
গাংনীর ভাটপাড়া নীলকুঠি ইকোপার্কে কথা হয় গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক রমজান আলীর সাথে। তিনি স্ত্রী পুত্র এবং পুত্রবধুসহ পরিবারের সকলেই এসেছেন অবসাদ নিতে। তিনি জানায়, ভাটাপড়া নীলকুঠি একটি ঐতিহাসিক স্থান। দুরদরান্ত থেকে মানুষ এখানে ঘুরতে আসতো। এখানে প্রবেশ মুল্য করায় অনেকেই আসছেন না। এ সকল স্থানগুলিকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা প্রয়োজন। তাহলে নতুন প্রজন্ম পুরাতন স্মৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা পাবে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে দর্শনীয় স্থানে যাবার জন্য যথাযথ দায়িত্বরত কেয়ারটেকারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায়, টহল পুলিশ ও আনসার দেয়া হয়েছে। সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে কারো আনন্দে ভাটা না পড়ে।