
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
‘আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে আবারও ১’শ ৯৫ ভূমি ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে মুজিববর্ষের ঘর। আগামী ২১জুলাই ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে এসব ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা করেছে উপজেলা প্রশাসন। ভুমি ও গৃহহীনরা দেখছে স্বপ্নের হাতছানি।
উপজেলার ফুলজোড় নদীর তীরে অথবা কোন পুকুরের পাড়ে দাড়িয়ে আছে দৃষ্টি নন্দন সাড়ি সাড়ি পাকা ঘর। ঘরের চালায় বাহারী রঙ্গের টিনের ছাউনি ঘরের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আর সেই ঘরেই বসবাসের সুযোগ পাচ্ছে ভুমি ও গৃহহীন পরিবার। ইতিমধ্যে সেই সৌভাগবান ভুমিহীনদের তালিকাও চুড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন ঘর পেয়ে খুশি ভুমিহীন পরিবার। এক সময়ে যারা থাকতো অন্যের বাড়িতে আশ্রিত বিভিন্ন রাস্তার পাশে অথবা বনে জঙ্গলে ঝুপড়ি ঘরে । এখন তাদেরই ঠাই হলো এই স্বপ্নময় রঙ্গিন ঘরে। স্বপ্নের ঘর পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাসের আশা করছে অসহায় মানুষগুলো। আগামী ২১জুলাই সেই স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে। ১শ’৯৫টি পরিবারের কাছে মুজিববর্ষের ঘর হস্তান্তর করার জন্য প্রস্তুত করা রয়েছে। এসব ঘরে বারান্দা, ২টি বেড রুম এবং একটি করে বাথরুম ও রান্নাঘর রয়েছে। এসব ঘর আগামী ২১জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফান্সের মাধ্যমে উদ্বোধন শেষে তাদের জমির দলিলসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে। সেই আনন্দঘন উৎসব বরণে প্রস্তত ভুমি ও গৃহহীন পরিবারসহ রায়গঞ্জবাসী।
উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের প্রতাবদিঘি এলাকার উজ্জল হোসেনের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন জানান, স্থানীয় একজনের বাড়ির পাশে একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে আশ্রিত ছিলাম বেশ কয়েক বছর। ঘরে স্থান না হওয়ায় একমাত্র সন্তান পাঠানো হয় মামার বাড়িতে সেখানেই ছেলে লেখাপড়া করতে থাকে। ইতিমধ্যে বাড়ির মালিক সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। কয়েক মাস অন্যত্র ভাড়া থাকি। কিন্ত স্বামীর আয় রোজগারে ভাড়া টাকা না দিতে পাড়ায় তাড়াও আমাদের বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়। এরপরে যাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারের কাছে। সেখানে আবেদন করি। এরপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপা আমারে একটি ঘর দিয়েছে। সেই ঘরেই স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করছি। আল্লাহ খুব সুখে রেখেছে। একই এলাকার সালমা খাতুন। স্বামী মনিরুজ্জামান একবারেই ভুমিহীন। মনিরুজ্জামানের ভাই একটি খাসের জমিতে বসবাস করেন। তারপাশেই সে আশ্রিত থাকতেন। কিন্ত একসময় তার ভাইও তাকে তাড়িয়ে দেয়। পরে তিনিও প্রধানমন্ত্রীর একটি ঘর উপহার পান। এভাবেই উপজেলার বিভিন্ন হতদরিদ্র ভুমি ও গৃহহীন পরিবার মুজিব শতবর্ষের ঘর উপহার পেয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছেন।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসরা তৃপ্তি কনা মন্ডল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ভিশন ছিলো দেশে কোন ভূমিহীন পরিবার থাকবে না। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য মুজিববর্ষে ভূমি ও গৃহহীনদের ঘর উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় দফার ৪র্থ পর্যায়ে ১’শ ৯৫টি ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। আগামী ২১জুলাই তালিকাভূক্ত ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে জমির দলিল হস্তান্তরসহ সব ধরনের প্রস্ততি শেষ করা হয়েছে। সঠিকভাবে যাচাই বাছাই শেষ করেই দেওয়া হচ্ছে সুবিধাভোগিদের স্বপ্নের ঘর।
এ উপজেলায় ১ম পর্যায়ে ১শ’টি.দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩০টি,তৃতীয় পর্যায়ে ১ম দফায় ৩৫টি, দ্বিতীয় দফায় ৩৫টি,তৃতীয় ধাপে ১শ’টি ঘর ভুমি ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা তৃতীয় দফায় ৪র্থ পর্যায়ের ১শ’৯৫টি ঘর হস্তান্তরের। আর সেই প্রতিক্ষার অবশান হতে যাচ্ছে ২১জুলাই।