
বিশাল রহমান, দিনাজপুর ব্যুরোঃ
বৃহত্তর দিনাজপুরের তিন জেলায় সরকার কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে নেসকো গতকাল গভীর রাতে লোডশেডিং এর এলাকাভিত্তিক শিডিউল ঘোষণা করে। কিন্তু শিডিউল ঘোষণার পরে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলায় আজকের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং এ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ঠাকুরগাঁও শহরের মুন্সীপাড়া এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহক কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন আজ সকাল হতে প্রতিঘন্টায় বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে।
এদিকে শহরের ঘোষপাড়ার গৃহিনী মমতাজ বেগম বলেন,ফেসবুকে লোডশেডিংয়ের সময়সূচি দেখে সকাল ৯টায় রান্না চাপানোর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যায়। এর দু’ঘন্টা পর বিদ্যুৎ আসলে একনাগাড়ে ৩০ হতে ৪৫ মিনিটের বেশি থাকছে না। একই অভিযোগ বিসিক শিল্পনগরীর একজন কারখানা মালিকের। তিনি বলেন, একনাগাড়ে একঘন্টাও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া না গেলে তাদের মতো বিদ্যুৎ নির্ভর কলকারখানা মালিকদের পথে বসতে হবে।
এবিষয়ে নেসকো ঠাকুরগাঁওয়ের ফোনে বারবার কল দিয়েও কারো প্রতিক্রিয়া নেয়া সম্ভব হয়নি। নেসকোর রংপুর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক দেশবাংলাকে বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে লোডশেডিং দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং শিডিউল বিপর্যয় সম্পর্কে তিনি বলেন, আসলে লোড ম্যানেজমেন্ট করতে প্রথম দিকে একটু সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক।
এদিকে বৃহত্তর দিনাজপুরের গ্রামাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকদের অবস্থা আরও করুণ। এসব অঞ্চলে টানা ৩ হতে ৪ ঘন্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। রুহিয়া এলাকার কৃষক মানিক চন্দ্র দেশবাংলাকে বলেন, দীর্ঘ খড়ায় জমিতে পানি নেই। আমন চাষের এ ভরা মৌসুমেও যদি বিদ্যুৎ নিয়ে এরকম বিপর্যয়ের মধ্যে পরতে হয় তবে আগামীতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না। দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিবে। একইরকম কথা বলেছেন চিলারং এলাকার কৃষক মন্তাজ আলী। তিনি বলেন বৃষ্টি নেই, সেচপাম্প বিদ্যুৎ সংকটে চলছে না। আগামীতে পরিবারের ভরণপোষণ কিভাবে হবে।
গ্রামাঞ্চলে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে আকাশে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং বিদ্যুৎ সংকট হাজার হাজার হেক্টর ধান চাষের জমি শুন্য পরে রয়েছে। গতকাল বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং শিডিউল ঘোষণার পর আজকের বিদ্যুৎ নিয়ে ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। অবিলম্বে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি বৃহত্তর দিনাজপুরের তিনজেলার মানুষের।