

সম্রাট হোসেন, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ)
প্রতিনিধিঃ
আমরা গরীব মানুষ তাই আমাদের খোঁজ কেও রাখেনা। ১০ বছর ধরে বৃষ্টি হলেই ঘরের চালা দিয়ে পানি পড়ে।বৃষ্টির রাতে পলিথিন মুড়িয়ে ঘরের এক কোণে বসে রাত কাটাতে হয়। টয়লেট, টিউবওয়েল গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখানে মানুষ থাকার মত পরিবেশ নেই আমরা গরীব তাই এখানে থাকি,আমরা আবার মানুষ নাকি! কথা গুলো বলছিলো ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দুধসর গ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্পের মধ্য বয়সী রাহি বেগম। শুধু রাহি বেগম নয় এমন মানবতার জীবন যাপন করছেন দুধসর আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রায় ২ শতাধিক পরিবার।
১৯৯৮ সালে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন জেলার ২ শতাধিক ভূমিহীন পরিবারের মাঝে ঘর বিতরণ করেন দুধসর আশ্রয়ন প্রকল্পে।টিনের তৈরি ঘরগুলো প্রায় দশ(১০) বছর আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। টিনের চালা ও বেড়া গুলো ভেঙ্গে গেছে। টিনের তৈরি টয়লেট গুলো আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। টিউবওয়েল গুলোতে আগের মত পানি উঠেনা।প্রতিটি ঘরের চালায় পলিথিন ও কলার পাতা দিয়ে বৃষ্টির পানি থেকে বাঁচার চেষ্টা করে তারা কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয় না। বৃষ্টি আসলে সবাই মিলে পলিথিন মুড়ি দিয়ে বসে থাকতে হয়। কখনো কখনো সারা রাত বসে থাকতে হয় তাদের।
বাবলু মণ্ডল ১৯৯৮ সাল থেকে আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাস করছেন। তিনি বলেন আজ ১০ বছর ধরে চরম মানবতার জীবন যাপন করছেন তারা। তিনি আরো বলেন, আমরা খুব গরীব ও অসহায় তিনবেলা খাবারই পাইনা তবে ঘর ঠিক করবো কি করে। উপজেলায় অনেক বার গিয়েছি তারা বলে ঘর ঠিক করে নিতে। খাবারই পাইনা ঠিক মত ঘর ঠিক করবো কি দিয়ে। ১৯৯৮ সালে ২ শতাধিক ঘর, ২ টা পুকুর, একটি মসজিদ নিয়ে দুধসর আশ্রয়ন প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিভিন্ন ধর্মের ১৮০ টি পরিবার বসবাস করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয়ন প্রকল্পের মানুষের মৌলিক অধিকারের কোনটিই সঠিক ভাবে পূরণ হচ্ছে না। বারবার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিকটে ধর্না দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। তাই অধিকাংশ মানুষ তাদের ভাগ্যের দোষ দিয়ে বলেন, আমরা গরীব, আমরা আবার মানুষ নাকি।
এই বিষয়ে দুধসর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দীন সাবু বলেন,আমি নতুন দায়িত্ব গ্রহন করেছি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে দ্রুত ঘর গুলোর মেরামতের চেষ্টা করবো।