
মোহনপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ে অস্থায়ী জনবল নিয়োগে ও বেতন ভাতা পরিশোধে চরম গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। কর্মস্থলে যোগদানের পর দু-মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বেতন ভাতা পাননি কর্মিরা। সোমবার (১৮ জুলাই) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীদের সাথে কথা বলে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়। কর্মীদের অভিযোগ, এতো নিম্ন পদে কাজ করেও বেতন ভাতা না পেয়ে দূর্বিষহ জীবনযাপন করছেন তারা। বিল তুলে নিলেও কোম্পানি তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করেননি। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন কর্মী (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) বলেন, আমরা সিকিউরিটি সার্ভিসের আওতায় কাজে রয়েছি। বেতন ভাতা এখনো পাইনি। তবে বেতনের চেক রেডি হয়েছে বলে ব্যাংক থেকে একজন ফোন জানিয়েছেন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অনিয়মের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ে জনবল নিয়োগে ও বেতন ভাতা পরিশোধে ঘাপলাবাজিতে রিতিমত বিব্রত রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন এমপি। তিনি বলেন, সিকিউরিটি কোম্পানি ছয় লক্ষ টাকা বিল তুলে নিয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত কর্মিদের বেতন ভাতা পরিশোধ করেনি। এতে আমি চরম বিব্রত বোধ করছি।
জানা গেছে, কর্মীদের বেতন ভাতার টাকা তুলে নিয়েছেন জনবল নিয়োগকারি প্রতিষ্ঠান বিএসএস সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামের ম্যান পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানি। রাজশাহী সিভিল সার্জনের নির্দেশে বিল ভাউচারে সাক্ষর করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডা. আরিফুল কবীর। এ কোম্পানিকে জুন মাসের ৬ লক্ষাধিক টাকা বিল পরিশোধ করা হয়। বিল তুলে নিয়ে লাপাত্তা রয়েছেন সিকিউরিটি কোম্পানি।
যোগাযোগ করা হলে বেতন ভাতার বিল উত্তলন করলেও তা জমা আছে বলে জানিয়েছেন বিএসএস সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডের ডিরেক্টর (অপারেশন) ও কন্ট্রাক্ট সুপারভাইজার আবু নাসের সাজরুল হক। তবে কোথায় টাকা জমা আছে তা তিনি প্রতিবেদককে বলতে পারেননি।
বিল পরিশোধের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডা. আরিফুল কবীর বলেন, সিভিল সার্জন অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কর্মিদের বেতন ভাতা পরিশোধ করবে সিকিউরিটি কোম্পানি। তারাই বিল তুলেছে। কিন্তু কর্মিদের বেতন কেন পরিশোধ করেনি তা আমার জানা নেই। আমি সিভিল সার্জন মহাদয়কে বিষয়টি জানিয়ে দিচ্ছি। তিনি ঢাকায় আছেন। এসে ব্যবস্থা নিবেন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, গত জুন মাসের বেতন কোম্পানিকে পরিশোধ করা হয়েছে। যদি তারা কর্মিদের বেতন পরিশোধ না করে থাকে তাহলে আমি কর্মিদের সাথে কথা বলে ব্যাবস্থা নিবো। বেতন যেন দ্রুত কর্মিরা পান সেই ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আমি ট্রেনিং এর কাজে ঢাকায় আছি।
বিএসএস সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডের ডিরেক্টর (অপারেশন) ও কন্ট্রাক্ট সুপারভাইজার আবু নাসের সাজরুল হক বলেন, আমাদের কোম্পানির জনবল নিয়োগের পর আরেকটা কোম্পানি মামলা করেছে। তাছাড়া দুইটা উপজেলায় ঝামেলা লেগে আছে। অনেকে দুই মাস, দেড় মাস ও এক মাস কাজ করেছে। তাদের বেতন সমন্বয়ের জন্য সময় হচ্ছে। তবে সকল কর্মিরা অবশ্যই বেতন পাবেন।
উল্লেখ্য, গত (৬ এপ্রিল) কর্মস্থলে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ১২ জন অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। এদের ১১ জন কর্মস্থলে যোগদান করলেও পুর্বের চুক্তিভিত্তিক ২ জন সেবাকর্মিকে ছাটাই করা হয়। যদিও তাদের ২ জনকে পরবর্তীতে মৌখিকভাবে কোম্পানির আওতায় নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।