
বিশাল রহমানঃ ঠা
ঠাকুরগাঁওজেলার হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত সম্মেলন আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলন ঘিরে গোটা উপজেলায় সাজ সাজ রব কিন্তু সম্মেলনের কাউন্সিলর তালিকা হতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান,সাবেক উপজেলা সভাপতি অধ্যক্ষ শামীম ফেরদৌস টগরের নাম বাদ দেওয়ায় তৃণমূলে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের বিগত বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা সম্মেলনের আগেই ওয়ার্ড পর্যায়ের নতুন কমিটি করার কথা থাকলেও তা নাকরে সম্মেলন আয়োজন করায় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও কাউন্সিলর তালিকা হতে এলাকার জনপ্রিয় নেতা সাবেক উপজেলা সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শামীম ফেরদৌস টগরের নাম বাদ দেওয়ায় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বিক্ষোভ দানা বাঁধছে। কাউন্সিলর তালিকা হতে অধ্যক্ষ শামীম ফেরদৌস টগরের নাম বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে দলের কাউন্সিলর করা হয়নি।
অপরদিকে শামীম ফেরদৌস টগর সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে অধ্যক্ষ শামীম ফেরদৌস টগর বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে শো’কজ করে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। শো’কজের সন্তোষজনক জবাব দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এছাড়াও বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জেলার পীরগন্জ উপজেলার সভাপতি ইমদাদুল হক, বালিয়াডাংগী উপজেলার আরও একজন নেতা দলের পদে থাকলেও শুধুমাত্র শামীম ফেরদৌস টগরের ক্ষেত্রে এরকম শাস্তিকে অন্যায় এবং একপেশে বলছেন টগর সমর্থকরা।
তাঁরা আরও বলেন, হরিপুর উপজেলার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বিরুদ্ধেও অতীতে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ থাকার পরেও তাদের জন্য কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে শুধুমাত্র টগরকে ঠেকাতে একটি কায়েমি স্বার্থবাদী মহল অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। অপরদিকে টগর বিরোধীরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রেরিত কাউন্সিলর তালিকায় টগরের নাম প্রেরণ করা হলেও জেলা আওয়ামী লীগ নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাঁর নাম বাদ দিয়েছে।
হরিপুর উপজেলা কাউন্সিলের কাউন্সিলর তালিকা বিতর্ক নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শফিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক দেশবাংলাকে বলেন, আওয়ামী লীগ বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল।এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকা অস্বাভাবিক নয়। কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন করে উপজেলা কমিটি এবং জেলা কমিটি ঐ তালিকা অনুমোদন করে। ওয়ার্ড কমিটি না করে সম্মেলন আয়োজনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তার উত্তর না দিয়ে ফোনটি কেটে দেন। সম্মেলনের বিষয়ে সভাপতি প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ভাই কাল সম্মেলন, ভীষণ ব্যস্ত। দাওয়াত রইল। আগামীকাল সাক্ষাতে কথা হবে।
সম্মেলন নিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোজাফফর হোসেন মানিক বলেন,হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এখন ঐক্যবদ্ধ। সরেজমিন মাঠ পর্যায়ে গিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি না করে সম্মেলন আয়োজনের নামে যা করা হচ্ছে, এতে দল আগামীতে বিপর্যয়ের মুখে পরতে পারে।
সম্মেলনের কাউন্সিলর তালিকা হতে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ শামীম ফেরদৌস টগর দৈনিক দেশবাংলাকে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ছাত্র লীগের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেছি। এরপর দলের দূঃসময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের হাজার হাজার দূঃসময়ের কর্মীদের নিয়ে জামাত বিএনপির চার দলীয় জোটের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। হাইব্রিডদের নিয়ে যখন এত হৈচৈ তখন আমাকে কাউন্সিলর তালিকা হতে বাদ দিয়ে সেই হাইব্রিডদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন অনেকেই। রাজনীতিতো শুধু হরিপুর উপজেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এর বাইরেও কাজ করার জায়গা আছে। যা হলো তা আপনার দূর্ভাগ্য না হরিপুরবাসীর দূর্ভাগ্য এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আগামীই এর যোগ্য জবাব দিবে।