
চট্টগ্রাম অফিসঃ
বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরি ও কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য শিঘ্রই নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ২টিসহ সারাদেশে ২৪টি নতুন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। আগামী ২৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাচুর্য়ালি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। জানতে চাইলে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চট্টগ্রামের উপ—পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দক্ষ জনশক্তি প্রেরণ এবং দেশে মানসম্পন্ন লোকবল তৈরি করতে সারাদেশে এক সাথে ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণ করছে সরকার। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৪টি টিটিসি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৮ জুলাই ভাচুর্য়ালি উদ্বোধন করবেন।’ মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘দেশে—বিদেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা মেঠাতে এসব টিটিসি নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতে পারে। তাতে বাড়বে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহও।’ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস সূত্র জানায়, ‘দেশের ৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামে ১টি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে রাউজান ও দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে নির্মিত ২টিসহ সারাদেশের ২৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) উদ্বোধন হবে আগামী ২৮ জুলাই। এরপর শুরু হবে ছাত্রছাত্রী ভর্তির প্রক্রিয়া।
এদিকে টিটিসি উদ্বোধনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গঠন করেছে প্রতিটি টিটিসিভিত্তিক উপকমিটি। কমিটিগুলো তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা গণভবন থেকে ভাচুর্য়ালি ২৪টি টিটিসি উদ্বোধন করবেন। এ সময় ঢাকা ওসমানি মিলনায়নে হবে মূল অনুষ্ঠান। সেখানে থাকবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। চট্টগ্রামের ২টি টিটিসি উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভার্চয়ালি যুক্ত হবেন এখানকার সংশ্লিষ্টরা।
আলোচ্য ৪০টি ছাড়াও দ্বিতীয় পর্যায়ে সারাদেশে আরো ১০০টি টিটিসি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে হবে ৪টি। হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, মিরসরাই ও পটিয়ায় এ ৪টি টিটিসি নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে টিটিসি’র ভূমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ কোটি টাকা। ৬টির জন্য ব্যয় হচ্ছে ১৮০ কোটি টাকা। প্রত্যেকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দেড় একর জমিতে নির্মাণ হচ্ছে।
বিএমইটি সূত্র জানায়, উদ্বোধনের পর দেশে—বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী কমপক্ষে ২০টি কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে ড্রাইভিং, কম্পিউটার, গার্মেন্টস, অটোমোবাইল, রেফ্রিজারেটর, ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, সিএনসি, আরপিএল ইত্যাদি। এজন্য প্রতিটি টিটিসি’তে বার্ষিক কমপক্ষে এক হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। কোর্সগুলোর মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন চার মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর। শিক্ষার্থীর ভর্তির যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি থেকে এসএসসি পাস।
রাউজানে নির্মিত নতুন টিটিসি’র ঠিকাদার ওমানস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি মো. ইয়াছিন চৌধুরী সিআইপি বলেন, ‘প্রবাসীদের কল্যাণে একটি টিটিসি নির্মাণ করতে পেরে আমি নিজেও আনন্দিত। আশা করি ভবিষ্যতে এই টিটিসি থেকে দক্ষ জনশক্তি বের হয়ে বিদেশে গিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’