
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর ঢাকার কামরাঙ্গীচর থেকে চুরি হয়ে যাওয়া ৭মাস বয়সী শিশুকে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে র্যাব-১০। এ ঘটনায় র্যাব প্রধান দু অভিযুক্তকে আটক করেছে। উদ্ধার হয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা গেছে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন ঝাউলাহাটি এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করতো সোনিয়া আক্তার (২১) ও তার স্বামী- মোঃ সাগর (২৩)। সাগর পেশায় একজন প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক। গত ১৩ জুলাই উক্ত মহিলার ভাসুর মোঃ শাহজাহান (২৮) পেশায় একজন রিকশা চালক সে তার কাজ শেষে বাড়ী ফেরার পথে মুন্নি ও মোঃ সুমন নামক দুইজন ব্যক্তির সাথে দেখা হলে তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আশ্রয়ের জন্য শাহজাহান এর নিকট সাহায্য চাইলে শাহজাহান তাদেরকে আশ্রয়ের জন্য তার ছোট ভাই সাগর এর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তার ভাই সাগর ও সাগরের স্ত্রী সোনিয়ার কাছে মুন্নি ও সুমন’কে আজকের রাতের জন্য তাদের বাসায় থাকার জায়গা দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। শাহজাহানের অনুরোধে সাগর ও তার স্ত্রী সোনিয়া মুন্নি ও সুমনকে তাদের বাসায় থাকার জন্য জায়গা দেয়।
পরের দিন ১৪ ই জুলাই সকালে যথারিতি সাগর ও শাহজাহান তাদের কাজের জন্য বাইরে গেলে সুমনও তাদের সাথে বেরিয়ে যায়। অতপর আনুমানিক দুপুর আড়াইটার সময় সাগরের স্ত্রী সোনিয়া তার ৭ মাসের শিশু কন্যা মোছাঃ মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে মুন্নির পাশে তাদের খাটের উপর শুইয়ে রেখে দুপুরের রান্না করার জন্য রান্না ঘরে প্রবেশ করে। কিছুক্ষন পর সোনিয়া তার মেয়ের কোন সারাশব্দ না পেয়ে ঘরের ভিতরে গিয়ে তার মেয়ে ও মুন্নিকে দেখতে না পেয়ে চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে জড়ো করে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার স্বামী ও ভাসুরকে ঘটনাটি জানায়। পরবর্তীতে সোনিয়া তার স্বামী ও ভাসুরসহ আত্মীয়-স্বজনদের সাথে পরামর্শ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে এবং র্যাব-১০ এর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গত ১৪ জুলাই আনুমানিক রাত সাড়ে আটটার দিকে গোপন সংবাদের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন হুজুরপাড়া বেইলী রোড এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনার ৬ ঘন্টার মধ্যে ভিকটিমের মা সোনিয়া আক্তারের দেখানো ও শনাক্ত মতে চুরিকৃত ৭ মাস বয়সী শিশু কন্যা মোছাঃ মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে উদ্ধার করে। এ সময় র্যাব-১০ এর আভিযানিক দলটি মুন্নি (১৮) ও মোঃ সুমন (২০)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, প্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা শিশু চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ কামরাঙ্গীরচরসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাসা বাড়ী থেকে শিশু বাচ্চা চুরি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার নিঃসন্তানদের নিকট মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব-১০।