

আশীষ দাশ গুপ্ত, হাওড়াঞ্চল প্রতিনিধিঃ
হাওরাঞ্চলে আবারো চামড়া সিন্ডিকেটের গভীর ষড়যন্ত্রে দিনভর কোরবানির চামড়া বিক্রি হলো পানির দামে। শুধু এ বছরই নয়, এ সিন্ডিকেট যুগযুগ ধরে এ কারসাজি চালিয়ে গেলেও দেখার মতো কেউ নেই।
কোরবানির জবাইকৃত পশুর চামড়া ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নিজেদের মাঝে ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও বিক্রিত চামড়ার টাকা এলাকার মানুষ সাধারণত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও হতদরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত অসহায় দুস্থদের মাঝে বিতরণ করে দেন। ফলে উচ্চ মুল্যে না হলেও অন্তত সঠিক মূল্যে কোরবানির চামড়া বিক্রি করতে চান কোরবানি দাতারা কিন্তু হাওরাঞ্চলে সঠিক মূল্যে চামড়া ক্রয় করার মতো উপযুক্ত চামড়া ব্যবসায়ী নেই।
লাখাই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন সহ হাওড়াঞ্চল জুড়ে কুরবানি দাতারা চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে পরেন বিপাকে। দাম নেই বা একেবারেই সস্তা দেখে অনেকেই চামড়া বিনামূল্যে দিয়ে দিচ্ছে।
বাদশা মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন গত বছর চামড়া ক্রয় করে কোন লাভ হয়নি ফলে চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়ছে পাইকাররা। তবে সাধারণের বক্তব্য ভিন্ন।
স্বজনগ্রামের রহিছ উদ্দিন মাষ্টার বলেন আমাদের আশি হাজার টাকা দামের গরুর চামড়া ১০০ টাকা বিক্রি করেছি। একেই গ্রামের আনজব আলী বলেন ৩০/৪০ টাকা দাম বলে তাই একজন ঋষিকে বিনামূল্যে চামড়া দিয়ে দিয়েছি।
পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার হাওড়াঞ্চল বেষ্টিত শরিফপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন বিভিন্ন গ্রামে ৩০ থেকে ১০০ টাকা দরে বগাদা মিয়া নামে এক ব্যক্তি চামড়া ক্রয় করছে। ওই এলাকার সামাদ মিয়া বলেন, ১ লাখ ২০হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া ১২০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ী খোকন রবি দাস বলেন, চামড়া কিনে কোন লাভ নেই। আমরা কিনে পাইকারী ব্যবসায়ীদের নিকট ৭০/৮০ টাকা ধরে বিক্রি করে দিয়েছি। কেহ চামড়া কেনেনা। সে আরো বলে তিন বছর ধরে চামড়ার দাম কম। উপজেলার মোড়াকরি ইউনিয়নের সাংবাদিক এম সি শুভ আহাম্মদ বলেন চামড়া বিক্রি করার জন্য কোন লোক না পাওয়ায় অনেক চামড়া অনেক মাদ্রাসায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এতে করে একদিকে বিক্রেতারা পান না চামড়ার সঠিকমূল্য। অন্যদিকে বঞ্চিত হন দরিদ্র শ্রেণির লোকজন। মূলতঃ প্রতিবছর কোরবানির সময় সিন্ডিকেটের কারসাজির জন্য এ সমস্যা আমজনতার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই হাওরাঞ্চলের মানুষ সরকারি ভাবে আামড়া ক্রয়ের দাবি জানিয়েছে।